মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যদের জন্য আলাদা সংরক্ষণ চায় না বাংলাদেশের আমশিক্ষার্থী। তুলে দেওয়া হোক তা। এই দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। দেশজুড়ে আন্দোলনের আঁচ ক্রমশ বাড়ছে। একের পর এক প্রাণ চলে যাচ্ছে হিংসাত্মক বিক্ষোভে। আন্দোলন থামাতে পুলিশ, সেনার ‘দমনপীড়ন’ নীতি অব্যাহত। তারই ফলস্বরূপ প্রাণহানি, রক্তের স্রোত। প্রতিবেশী দেশের এহেন পরিস্থিতিতে গর্জে উঠল এপার বাংলাও। বাংলাদেশের পীড়িত সাধারণ নাগরিকের পাশ দাঁড়িয়ে, শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে কলকাতা শামিল হল মিছিলে। শুক্রবার বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের দপ্তরের সামনে হয়ে গেল প্রতিবাদ মিছিল।
কলকাতা বরাবরই প্রতিবাদের শহর, প্রতিরোধের শহর। নিজের নয়, দূর থেকে সুদূরের জ্বালাও বুকে বহন করে এই কলকাতা। প্যালেস্টাইন হোক কিংবা ইরাক অথবা পাশের বাংলাদেশ – যেখানেই যখন সংকটের মুখে পড়ে মানবাধিকার, গর্জে ওঠে তিলোত্তমা। আর সেই কারণেই এখনও এত প্রাণোচ্ছ্বল, আবেগময় এ শহর। সেই আবেগেরই ফের প্রকাশ ঘটল শুক্রবার, বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ মিছিলে । এখানকার বামমনস্ক ছাত্র সংগঠন ও মানবাধিকার সংগঠনের একদল কর্মী নন্দন চত্বরের সামনে মিছিলে শামিল হন। তাঁদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, পোস্টার। তাতে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের উপর পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদী বার্তা। কলকাতায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনের কার্যালয়ের সামনে তাঁরা প্রতিবাদ দেখান।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আগেই ‘সংহতি মিছিলে’র ডাক দিয়েছিল বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। শুক্রবার তাঁদেরই মিছিলে যোগ দিলেন মানবাধিকার সংগঠনের কয়েকজন সদস্য। মিছিলে বার্তা একটাই, সংরক্ষণের নামে আর যেন কোনও প্রাণ না যায়। দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা চাই। পোস্টারে, প্ল্যাকার্ডেও সেই একই কথা লেখা হয়েছে। শুধু প্রতিবাদ বা মিছিলেই সীমাবদ্ধ নয় কলকাতার সহমর্মিতার বার্তা। দুই বাংলার শিল্পী মহলও এনিয়ে নিজেদের মতো করে প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন। গানে, কবিতায়, ছবিতে উঠে এসেছে হিংসা বিরোধী বার্তা। এভাবেই দূরত্ব ঘুচে যাচ্ছে। প্রতিবেশীর বিপদ হয়ে উঠছে আমাদেরও আপন সংকট।