কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জেরে মৃত্যু! কোভিশিল্ড নিলেই কি হবে TTS? কী এই TTS? জেনে নিন
এক্সপ্রেস কলকাতা ডেস্ক: কোভিড 19-এর মতো অতিমারী থেকে বাঁচার ‘রক্ষাকবচ’ বলে দাবি করা কোভিশিল্ডের (Covishield) ভয়ংকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, হতে পারে TTS। অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে- সম্প্রতি একটি আইনি প্রক্রিয়ায় এমনটা জানিয়েছেন কোভিড টিকা প্রস্তুতকারক অ্যাস্ট্রাজেনেকা নিজেই। এই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে। কিন্তু ভারতীয়দের ক্ষেত্রে ভয় কতটা?
উল্লেখ্য, অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিডের টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে এমন দাবি করে ব্রিটেন আদালতে প্রথম মামলা দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। দাবি করা হয়, টিকা নেওয়ার পর তাঁর শরীরে অজানা রোগ দেখা দেয়। এরপর ২০২৩ সালে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি। তিনি অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের এপ্রিলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও তা জমাট বেঁধে যায়। এর ফলে তাঁর মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষত তৈরি হয়। ব্রিটেনের হাইকোর্টে সংস্থার বিরুদ্ধে প্রায় ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড দাবি করে ৫১টি মামলা দায়ের হয়। তবে কোনও অভিযোগ মানতে চায়নি সংস্থা।
TTS কী?
এর পুরো নাম- Thrombosis with Thrombocytopenia Syndrome. এটি এমন একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে, প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যায়। এর উপসর্গ একাধিক, যেমন - শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, পা ফুলে যাওয়া, টানা মাথা ধরে থাকা, পেট ব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির সহজেই চোট আঘাতের দাগ (bruising) হতে পারে।
তবে কী AstraZeneca-এর কোভিড টিকায় সত্যি TTS হয়? উত্তর- হ্যাঁ হতে পারে। কিন্তু তার সম্ভাবনা অতি ক্ষীণ। এটা খুব স্পষ্ট যে সংস্থার তরফে যা জানানো হয়েছে এবং এর আগের গবেষণাগুলি থেকে যা তথ্য উঠে এসেছে তাতে এটা স্পষ্ট যে- যাঁরাই অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা নিয়েছে তাঁরাই TTS-এ আক্রান্ত হবেন এমন নয়। আইনি প্রক্রিয়ায় সংস্থার তরফে নথিতে দাবি করা হয়েছে যে TTS-হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তা ‘rare’ এবং ‘uncommon’।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অস্কফোর্ডের এই টিকা ভারতে তৈরি করেছিল পুণের সিরাম ইন্সটিটিউট। কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের সাইড এফেক্ট নিয়ে হইচইয়ের মাঝে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলাও দায়ের হয়েছে। যেখানে কোভিশিল্ড টিকা নিয়ে কারও মৃত্যু কিংবা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে থাকলে তাঁকে আর্থিক সাহায্য করতে আর্জি জানানো হচ্ছে সরকারকে। এদিকে কোভিশিল্ডের সাইড এফেক্ট নিয়ে এবার মুখ খুললেন ICMR-এর বিজ্ঞানী ডা. রমন গঙ্গাখেদকর। তিনি বলেন, ‘ভয়ের কোনও কারণ নেই। ১০ লাখ মানুষের মধ্যে কেবলমাত্র সাত থেকে আটজন কোভিশিল্ড প্রাপকে থ্রম্বসিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে দ্বিতীয় ডোজে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে সেই ঝুঁকি কমতে থাকে। তৃতীয় বা বুস্টার ডোজের পর এই ঝুঁকি থাকে না বললেই চলে। যদি সাইড এফেক্ট হওয়ার থাকেই তবে তা দু’তিন মাসেই হবে।’