এক্সপ্রেস কলকাতা ডেস্ক: নির্বাচনের ইতিহাসে প্রথম, প্রতিদিন গড়ে ১০০ কোটি। লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha 2024) ইতিহাসে ভোটগ্রহণের আগে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ বাজেয়াপ্ত করল নির্বাচন কমিশন। গত ১ মার্চ থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৪৬৫০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১০০ কোটি টাকা। অর্থ ছাড়া বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মাদকও। এবারের লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার সময়ই কমিশন জানিয়েছিল, ভোটগ্রহণে দুর্নীতি রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেবে নির্বাচন কমিশন। সেই অনুযায়ীই একাধিক সংস্থার সহযোগিতা এবং আমজনতার সাহায্যেই এই বিপুল পরিমান সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে সক্ষম হয়েছে কমিশন।
সোমবার নির্বাচন কমিশন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় ৩৪৭৫ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। পাঁচ বছর পরে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৫০ কোটি টাকা। অর্থের পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত মাদকদ্রব্যের পরিমাণও বৃদ্ধি এবারে। ২০১৯ সালে ১২৭৯.৯ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য বাজেয়াপ্ত করেছিল নির্বাচন কমিশন। যেটা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৬৮.৮ কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে রাজস্থানে। সেখানে ৭৭৮ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে উদ্ধার হয়েছে মোট ২১৯ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে এবার সাত দফায় লোকসভা নির্বাচন হতে চলেছে। আগামী ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার ভোট হওয়ার কথা। সেদিন বাংলার কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি আসনে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন প্রক্রিয়া চলবে মোট ৪৩ দিন। আগামী ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় ধাপে ৭ মে, চতুর্থ ধাপে ১৩ মে, পঞ্চম ধাপে ২০ মে, ষষ্ঠ ধাপে ২৫ মে এবং সপ্তম ধাপে ১ জুন ভোটগ্রহণ হবে। ৪ জুন নির্বাচনের ফলপ্রকাশ।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোট ঘোষণার সময়ই কমিশন জানিয়েছিল, পেশিশক্তি, অর্থ, ভুল তথ্য ও আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘন বা কমিশনের ভাষায় 4M (Muscles, Money, Misinformation, MCC Violations-এর বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে তারা। সেই প্রক্রিয়া এখনও কার্যকর রয়েছে। কমিশনের বক্তব্য, ভোটারদের মধ্যে নগদ অর্থ, মাদক দ্রব্য এবং মদ যাতে বিলি না করা হয়, সেই দিকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে ভোটারদের প্রভাবিত করতে অন্য কোনও জিনিস যাতে না বিতরণ করা হয়, তা নিশ্চিত করতে নজরদারি চালাচ্ছেন আধিকারিকরা।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেবেন ৯৬.৮ কোটি ভোটার। ভোট ঘিরে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ৮৫ বছরের বেশি বয়সি ভোটাররা বাড়ি থেকেই ভোট দিতে পারবেন। তাঁদের বুথে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তীব্র গরমের কথা মাথায় রেখে পানীয় জল, শৌচালয়ে পাশাপাশি প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে অন্যান্য ন্যূনতম পরিষেবার ব্যবস্থা থাকবে। সন্ত্রাস-মোকাবিলায় প্রতি জেলায় নির্বাচন কমিশনের কন্ট্রোল রুম থাকবে। কোনও অভিযোগ পেলেই কড়া পদক্ষেপ করা হবে।