ভোট বঙ্গে রণক্ষেত্র নন্দীগ্রাম, ‘খুন’ BJP-র মহিলা সমর্থক, বিক্ষোভ-ভাঙচুরে তপ্ত পরিস্থিতি!
এক্সপ্রেস কলকাতা ডেস্ক: ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে জ্বলে উঠল তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত নন্দীগ্রাম। গভীর রাতে রক্ত ঝরেছে সোনাচূড়ায়। প্রাণ গিয়েছে বিজেপির এক মহিলা কর্মীর। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম। একের পর এক দোকানে আগুন, গাছ ফেলে পথ অবরোধ, বিক্ষোভ-ভাঙচুরে তপ্ত পরিস্থিতি। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী। এর মধ্যেই কাঁথির জনসভা থেকে ‘বদলা’র হুঁশিয়ারি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত্রিবেলা নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ার ১ নং ব্লকের মনসা বাজার এলাকায় সংঘর্ষ বাধে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে। তার থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। দুই পক্ষ বাঁশ লাঠি সহ অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। যার ফলে আহত হন এক মহিলা সহ ৬ জন। অভিযোগ, তৃণমূলের দলবল এক বিজেপি কর্মীর উপর বাঁশ লাঠি হাতে চড়াও হয়। সেই সময় ছেলেকে বাঁচাতে তাঁর মা অর্থাৎ রতিবালা আড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তখনই বাঁশের বাড়ি লাগে তাঁর মাথায় ও সঙ্গে-সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
এই ঘটনাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিজেপির বিক্ষোভ শুরু হয়। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে প্রতিবাদ করতে থাকেন তাঁরা। বেলা বাড়তেই অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একের পর এক বাড়ি-দোকানে আগুন ধরানো হয়েছে বলে খবর। নন্দীগ্রাম – ভাঙাবেড়া সড়কে বিজেপির পথ অবরোধ। শেষ পর্যন্ত লাঠিচার্জ করে উপস্থিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে নেমেছে বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী, র্যাফ। সোনাচূড়া অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দেবকুমার রায় সহ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে।
এলাকার বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বুধবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্ররোচনামূলক মন্তব্যের পরই এই ঘটনা ঘটেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি নিশানা করে শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, “গতকাল ভাইপো নন্দীগ্রামে যে উস্কানি দিয়ে গেছে তার প্রত্যক্ষ পরিণাম হচ্ছে এই রক্তপাত। পরাজয় নিশ্চিত বুঝে এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তৃণমূল।” যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের দাবি, “বিজেপির হার নিশ্চিত। এটা বুঝতে পেরেই শুভেন্দু অধিকারী প্ররোচনা দিয়ে নন্দীগ্রামকে অশান্ত করছে।” এদিকে তমলুক ও কাঁথি লোকসভা ভোটের আগে আজই শেষপ্রচার। এদিন সকালে শুভেন্দু অধিকারী কাঁথিতে জনসভা করেন। সেখান থেকেই বদলার হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কথায়, “আমি ভূমিপুত্র। এই ঘটনার বদলা নেব।”