Last Update
ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে উত্তরের ৫ জেলা
রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির ছন্দপতন হয়েছে ঠিকই, স্বস্তি ফেরেনি। উলটে উদ্বেগ সপ্তমে। একদিকে নদীর জলস্তর কমতে বেড়েছে ভাঙনের বিপদ। জলদাপাড়ার তোর্সা এবং শিসামারা উপচে পড়েছে। কোথাও বনের রাস্তা ভেসেছে। অনেক নজর মিনারে খাবার ও জল নৌকায় পৌঁছে দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু এবং ঘূর্ণাবর্তের যুগলবন্দিতে চলতি সপ্তাহে উত্তরের শিয়রে ঘোরতর দুর্যোগের বিপদ অপেক্ষায়। তাই উদ্বেগ কাটবে আপাতত তেমন লক্ষণ নেই।ভয়ঙ্কর বিপর্যের মুখোমুখি হতে পারে উত্তরের পাহাড়-সমতলে পাঁচ জেলা। সোমবার এমনই আভাস মিলেছে ভারত ও ভুটানের আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে। জানা গিয়েছে, বুধবার থেকে দার্জিলিং পাহাড়, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে ২০০ মিলিমিটার থেকে তারও বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল। 'লাল' এবং 'কমলা' সতর্কতা জারি হয়েছে জেলাগুলোতে। তুমুল বৃষ্টিপাতের জন্য এখানে হতে পারে ব্যাপক হড়পা বান এবং ভূমিধসের বিপর্যয়। বিপদের সম্ভাবনা আরও তীব্র হয়েছে ভুটানের আবহাওয়া দপ্তর 'ন্যাশনাল সেন্টার ফর হাইড্রোলজি অ্যান্ড মেট্রোলজি' থেকেও দক্ষিণ ভুটানে ২০০ মিলিমিটারের বেশি ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ এবং হড়পা বান ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করায়।আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ ভুটানের জলে বিধ্বস্ত হতে পারে ডুয়ার্সের হাসিমারা, কালচিনি, বক্সা ও জলদাপাড়া জঙ্গল এলাকা, আলিপুরদুয়ার শহর এবং কোচবিহার জেলা। একই সময়ে উত্তর সিকিমেও অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা থাকায় ফের বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারে তিস্তা। সিকিমের পাশাপাশি বিপন্ন হতে পারে জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং জেলা। ইতিমধ্যে নদীর জলস্তর নামতে ভাঙনের বিপদের মুখে কোচবিহার জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের লাঙ্গল গ্রাম বেগারখাতায এলাকায়। একমাত্র রাস্তা রায়ডাক নদীর জলস্তরে ভেঙেছে। প্রায় দুই শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে ত্রাণ শিবিরে। লাগাতার ভাঙনের কবলে প্রস্থ তুফানগঞ্জের কৃষ্ণপুর, দিনহাটার গীতালদহ, ওকরাবাড়ির মতো এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ১১টি এলাকায় কাজ শুরু করেছে সেচদপ্তর। কিন্তু সেখানেও বুধবার থেকে কী পরিস্থিতি দাঁড়ায় সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে সেচ দপ্তর এবং জেলা প্রশাসনের কর্তাদের।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, "উত্তরের পাহাড়-সমতলের পাঁচ জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে কমলা ও লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বাড়বে।" আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং পাহাড়ে অতিভারী বর্ষণের 'কমলা' সতর্কতা জারি হয়েছে ১০ এবং ১২ জুলাই। মাঝে ১১ জুলাই রয়েছে অতিরিক্ত ভারী বর্ষণের 'লাল' সতর্কতা। জলপাইগুড়িতে ১০ জুলাই থেকে ১২ জুলাই রয়েছে অতিভারী বর্ষণের 'কমলা' সতর্কতা। আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বেশি থাকতে পারে। এখানে ১০ এবং ১১ জুলাই অতিরিক্ত ভারী বর্ষণের 'লাল' সতর্কতা জারি হয়েছে। ১২ জুলাই থাকবে অতিভারী বর্ষণের 'কমলা' সতর্কতা।
TOP RELATED