Last Update
‘নাইট ডিউটি থেকে অব্যাহতি’ প্রসঙ্গে মত স্বস্তিকার
আর জি কর কাণ্ড আবারও নতুন করে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। বাংলার ঘটনায় সরব গোটা দেশ। রাখি বন্ধনের দিন খোদ বলিউড অভিনেতা অর্জুন কাপুর পর্যন্ত পুরুষদের সংযত হওয়া এবং মন-মানসিকতা বদলানোর পাঠ দিয়েছেন। এদিকে কলকাতার তরুণী ডাক্তারের ধর্ষণ ও খুন ঘটনার জেরে কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রে একাধিক আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে মেয়েদের যথাসম্ভব নাইট ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথাও রয়েছে। এবার সেই প্রসঙ্গেই সরব হলেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও এপ্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন।স্বস্তিকার মন্তব্য, “নাইট ডিউটি থেকে অব্যহতি নয়, কর্মক্ষেত্রে নারী সুরক্ষা আইন চাই। মেয়েদের জন্য কোনও গণ্ডি বা লক্ষ্মণরেখা টানবেন না। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন আইনসভায় আইন প্রণয়ন করুন।” সোশাল মিডিয়ার দীর্ঘ পোস্টে অভিনেত্রী এও উল্লেখ করেন যে, “আর জি কর প্রসঙ্গে আমি একটি প্রেস রিলিজ দেখলাম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে। তাতে একটা অবান্তর, আপত্তিজনক বিষয় দেখলাম। এইজন্যই কি মেয়েরা রাতদখল করেছিল? ‘মেয়েদের রাতে ডিউটি না করাই ভালো’… ইত্যাদি। আমরা কি কেউ কোনও দিন সকালে, দিনের আলোয় যৌননিগ্রহের শিকার হইনি? সূর্যালোকে কি যৌন নিপীড়করা রাস্তায় বের হয় না? দিনের বেলায় যদি কোনও মেয়ে এরপর যৌন হেনস্থার শিকার হয়, তবে কি দিনেও ডিউটি ছেড়ে দেব সকলে? আচ্ছা, ধরলাম কাজেই গেলাম না, বাড়িতে চুপটি করে বসে রইলাম, যেমন ছিলাম অনেকে কোভিডকালে, সেখানে সব থেকে বেশি হয়েছে গার্হস্থ্য হিংসা। কোথায় নিরাপদ আমরা? সব থেকে ভয়ানক যা, তা হল সমাজের কিছু মানুষের এই বিকৃত মানসিকতা। প্রতি পলে, প্রতি পদক্ষেপে। কিন্তু একটা সরকার, কীভাবে নারী বিদ্বেষমূলক বিবৃতি দিতে পারে? প্রশ্ন তুললেন স্বস্তিকা।”রবিবার সিনেমাপাড়ার প্রতিবাদী মিছিলে দাঁড়িয়ে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বললেন, এই নিয়ম যদি চালু হয় তাহলে মেয়েদের রাত দখলের মানে কী? নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই যদি একসঙ্গে কাজ না করতে পারে, তাহলে এত প্রতিবাদের মানে নেই। মেয়েদের রাস্তাঘাটে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের। যেখানে তিনি কাজ করবেন সেখানকার কর্তৃপক্ষের। এমন নিয়ম হওয়া মানে রাতের কাজ থেকে মেয়েদের বঞ্চিত করা ৷ তাঁর অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা। এপ্রসঙ্গে চুর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের মত, “মেয়েরা রাতে বেরোবে না সেটা সুরক্ষা নয়। সুরক্ষা দেওয়া দরকার- সেটা নিয়ম এবং কার্যকরী হতে হবে।”প্রসঙ্গত, আর জি করের ঘটনার পরই ‘রাত্তিরের সাথী’ নামে নয়া প্রকল্প রাজ্য সরকারের তরফে চালু করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় মহিলাদের জন্য হাসপাতালগুলিতে শৌচালয়-সহ বিশ্রাম কক্ষ তৈরি হবে। রাতের জন্য বাড়তি মহিলা নিরাপত্তারক্ষী থাকবে। নজরদারির জন্য সিসিটিভির আওতায় তৈরি হবে ‘সেফ জোন’ ‘রাত্তিরের সাথী’ মোবাইল অ্যাপ তৈরি হবে, যা স্থানীয় থানার সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে এবং কোনও ঘটনা ঘটলে বিপদঘণ্টি বাজবে। চালু হবে ২৪ ঘণ্টার হেল্প লাইন নং – ১০০/১১২। হাসপাতালে প্রবেশের সময় সকলের নিরাপত্তা পরীক্ষা, শ্বাস পরীক্ষা করা হবে। কোনও মদ্যপ যাতে হাসপাতালে ঢুকতে না পারেন তার জন্য শ্বাস পরীক্ষা রাতের শিফটে মহিলাদের যথাসম্ভব বাদ রাখার পক্ষে সওয়াল রাজ্য সরকারের। যদি কাজ করতে হয়, তাহলে মহিলারা দুজন কিংবা গোষ্ঠীবদ্ধভাবে কাজ করবেন হাসপাতালের সবকটি তলায় পানীয় জলের ব্যবস্থা রাতের শিফটে পুরুষ-মহিলা কর্মীদের সমানুপাতে রাখতে হবে রাতে কাজের সময়ে কর্মক্ষেত্রে পরিচয়পত্র পরে থাকতে হবে। বেসরকারি সংস্থাকেও ‘রাত্তিরের সাথী’ ইনস্টল করতে হবে।
TOP RELATED