এক্সপ্রেস কলকাতা ডেস্ক: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবার ২৫,৭৫৩টি চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য সরকার। এসএসসির চেয়ারম্যান রায় ঘোষণার দিনই জানিয়েছিলেন, তাঁরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হবেন। সেইমতো বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যের তরফে আবেদন পত্রে জানান হয়েছে, ‘নির্বিচারে’ রাজ্যের 25,753 জনের চাকরি বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট৷
গত সোমবার হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করে। দেখা যায়, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের মোট মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। এরপরই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়েছিল এসএসসি। উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই বিশেষ বেঞ্চে শুনানি চলছিল হাইকোর্টে।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পর শিক্ষামন্ত্রই ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, “অযোগ্যদের বের করে দিয়ে নতুন নিয়োগ দিতে চাই আমরা। সেই আবেদন হাই কোর্টে করেছিল এসএসসি-ই।” কিন্তু সেই আর্জি বুঝতে না পেরে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে দিয়েছিলেন।
সোমবার এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান, হাই কোর্টের এই রায়ে তিনি খুশি নন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘পাঁচ হাজার জনের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তার জন্য ২৬ হাজার জনের কেন চাকরি বাতিল হবে?’’ সিদ্ধার্থ সে দিনই জানিয়েছিলেন, আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। সেই মতোই চাকরি বাতিলের নির্দেশের বিরুদ্ধে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) করল এসএসসি।
হাই কোর্টের এই রায়ের খবর প্রকাশ্যে আসতে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে চাকরিহারাদের মধ্যে। তাঁদের বক্তব্য, আদালতের রায়ে যে সব যোগ্য শিক্ষকেরা চাকরি হারালেন তাদের কী হবে। মানবিক দিক থেকেও কী ব্যাপারটা ভেবে দেখা যেত না! কয়েকজন অযোগ্য, অসৎ মানুষের জন্য হাজার হাজার পরিবার কেন শাস্তি পাবে? এক চাকরিহারার প্রশ্ন, “আমাদের হয়ে ভাবার কী কেউ নেই? আইনের এমন কী কোনও ধারা নেই, যারা মানবিক দিকটা ভাবে? আমাদের দোষটা কী?”
উল্লেখ্য, হাইকোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে, ভোটের ফল প্রকাশের পর ১৫ দিনের মধ্যে নতুন করে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। কিন্তু কীভাবে হবে সেই নিয়োগ, তা নিয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট বার্তা দিতে পারেনি এসএসসি। আপাতত রাজ্যের আবেদন সুপ্রিম কোর্ট গ্রহণ করে কি না, সেটাই দেখার।