Last Update
এবার রাজ্যের সব সিভিক ভলেন্টিয়ারদের চাকরি নিয়ে টানাটানি?
ফের সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার আর জি কর হাসপাতালে কর্মরত তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ খুনের মামলার শুনানিতে ফের একবার সুপ্রিম কোর্টে উঠে এল সিভিক ভলেন্টিয়ার প্রসঙ্গ।
সিনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী করুণা নন্দী সিভিকদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুললে রাজ্যকে একাধিক নির্দেশ দিল সর্বোচ্চ আদালত।
কলকাতা এবং রাজ্যে মোট কত সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে? তাদের যোগ্যতা কী? কোন আইন তাদের নিয়োগ? কীভাবে নিয়োগ করা হয়? তাদের দৈনিক ও মাসিক বেতন কত? রাজ্যের কাছে জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। পরবর্তী শুনানিতে এই গোটা বিষয় লিখিত হলফনামা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন আদালতে সিনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবীর প্রশ্ন, "যে সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগের বিরোধিতা আমরা করেছিলাম, তাদের নিয়োগ কার্যত দ্বিগুণ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। অথচ আগেই কলকাতা হাই কোর্ট এই নিয়োগ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।" এদিকে পালটা রাজ্যের আইনজীবী বলেন, দেশের সব হাসপাতালে একই নিয়ম মেনে নিয়োগ করা হয়। দিল্লিতে যে নিয়ম মেনে নিয়োগ হয় কলকাতাতেও একই জিনিস হয়।
প্রসঙ্গত, আর জি কর হাসপাতালে তরুণী ডাক্তার ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত হিসেবে যাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কলকাতা পুলিশের এক সিভিক ভলেন্টিয়ার। এই বিষয়ে এদিন প্রধান বিচারপতি বললেন, অভিযুক্ত একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। তাকে কিভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল? উত্তরে আইনজীবী বলেন, রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছিল যেই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় গার্হস্থ্য হিংসায় অভিযুক্ত বলেও প্রধান বিচারপতিকে জানান আইনজীবী।
সুপ্রিম নির্দেশ, হাসপাতাল-থানা এবং অপরাধস্থলে সিভিক ভলেন্টিয়ার মোতায়েন করা যাবে না। এই নির্দেশ পূরণ করতে রাজ্য সরকার ঠিক কী কী পদক্ষেপ করছে, সেই বিষয়েও জানাতে হবে।nএর আগের শুনানিতে আদালতে জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন কেন সেই বিষয়ে সওয়াল করেন। পাশাপাশি আর জি কর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের কথাও কোর্টে তুলেছিলেন তিনি। চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন থাকলে নিরাপত্তা কি বজায় থাকবে? কিকরে ডাক্তার সকল স্বাস্থ্যকর্মীরা সুরক্ষিত মনে করবেন নিজেদের, সেই নিয়ে সওয়াল করেন ইন্ডিয়া।
চুক্তিভিত্তিক কর্মীর পরিবর্তে হাসপাতালে প্রশিক্ষিত পুলিশকর্মী নিয়োগের দাবিও জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী। সাত দিনের ট্রেনিং দিয়ে কী ভাবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করা হয় সেই প্রশ্নও উঠেছিল। সেই সময় প্রধান বিচারপতির মন্তব্য করেছিলেন, "ওই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের কী ভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োগ করতে পারে রাজ্য সরকার? রাজ্যের এই বিষয়ে ভাবা উচিত।"
প্রধান বিচারপতির আরও বলেছিলেন, এভাবে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়োগ করলে, ডাক্তার, বিশেষত মহিলা ডাক্তাররা কীভাবে নিজেদের সুরক্ষিত মনে করবেন? বিচারপতি বলেন, "এই অপরাধ চুক্তিভিত্তিক কর্মী দ্বারা সংগঠিত হয়েছে। পুলিশ বারাক থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালে ঢুকে পড়ে অভিযুক্ত। এই অবস্থায় ফের চুক্তিভিত্তিক কর্মী ৭ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োগ করা হচ্ছে?' আর এদিনও সেই সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়ে রাজ্যের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে নতুন করে অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার।
TOP RELATED