Last Update
ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত
গায়ানার আবহাওয়ার মতোই কি অবস্থা নয় ভারতের ক্রিকেটভক্তদের? এক-একটা আইসিসি টুর্নামেন্ট আসে, আর প্রত্যেকবার খুব কাছ থেকে বেরিয়ে যায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন। গত বছরের বিশ্বকাপ আজও মনভার করে দেয় সমর্থকদের। তবু একটা স্বপ্ন, একটা আশা নিয়ে ফের রোহিত-বিরাট-বুমরাহদের দেখতে বসা। আর সেই অপূর্ণ স্বপ্নের দিকে আর একবার এগিয়ে এল টিম ইন্ডিয়া। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তারা ইংল্যান্ডকে হারাল ৬৮ রানে। ছিনিয়ে নিল ফাইনালের টিকিট।
বৃষ্টিবিঘ্নিত সেমিফাইনালে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেয় ইংল্যান্ড। মেঘ কেটে তখন রোদ উঠেছে গায়ানায়। কোহলি ও রোহিত মারমুখী মেজাজেই শুরু করেছিলেন। টপলির বলে দুর্দান্ত ছক্কা মারার পর পরই আড়াআড়ি ব্যাট চালিয়ে বোল্ড হয়ে যান ‘কিং’। বিশ্বকাপে খারাপ ফর্ম অব্যাহত রইল কোহলির (৯)। কিন্তু হিটম্যান থাকতে চিন্তা কীসের! আগের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যেখানে শেষ করেছিলেন, এদিন সেখান থেকেই শুরু করলেন। শর্ট মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়ে ঋষভ পন্থ (৪) ফিরে গেলে সূর্যকুমারকে সঙ্গে নিয়ে তিনিই খেলার হাল ধরেন। দুই ব্যাটার যখন খেলাটা ভারতের দিকে এনে ফেলেছেন, তখন ফের নামল বৃষ্টি। ম্যাচ পিছিয়ে গেল আরও কিছুক্ষণ। ফের যখন শুরু হয় রোহিতদের একই রকম সপ্রতিভ লাগছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত রোহিত (৫৭) অর্ধশতরান করে ফিরে গেলে সূর্যও ফেরেন ৪৭ করে। চারটি বাউন্ডারি ও দুটি ছক্কার ইনিংসটিও অসাধারণ। তার পর হার্দিক পাণ্ডিয়া (২৩) বড় ইনিংসের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি আর শিবম দুবে (০) পর পর আউট হওয়ার পরই পরিষ্কার হয়ে যায় খুব বড় স্কোর হচ্ছে না। ভারত শেষ করল ৭ উইকেটে ১৭১ রানে।
বৃষ্টিভেজা মাঠে কি সেই রানটা যথেষ্ট? সেই প্রশ্নটাই ঘুরছিল প্রথম ইনিংসের পর। কিন্তু যাঁদের কাছে জশপ্রীত বুমরাহ রয়েছেন, তাঁরা সব অসম্ভবকেই সম্ভব করতে পারে। সঙ্গে তিনজন স্পিনার। যেখানে লিয়াম লিভিংস্টোনের বল একহাত করে ঘুরছে, সেখানে তো অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদবরা ঘূর্ণি দেখাবেন। আর সেটাই ঘটল। অক্ষর প্যাটেলকে আনতেই ম্যাজিক! ইংল্যান্ড ব্যাটারদের কাছে বিষয়টা দাঁড়াল শুধু যাওয়া-আসা। একের পর উইকেট তুলে গেলেন অক্ষর (২৩/৩)। ম্যাচের সেরাও তিনি। অন্যদিকে নিজের কাজ করে গেলেন বুমরাহ (১২/২)। শুরুটা ভালো করেও থেমে যেতে হল বাটলার (২৩), সল্টদের (৫)। একই অবস্থা হল মইন আলি (৮), বেয়ারস্টদেরও (০)। একদিকে চেষ্টা করছিলেন হ্যারি ব্রুক (২৫)। ঠিক তখনই ঘাতক হয়ে উঠলেন কুলদীপ (১৯/৩)। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে সোজা বোল্ড হলেন ইংরেজ ব্যাটার। ওখানেই শেষ ইংল্যান্ডের আশা-ভরসা। বাকি জোফ্রা আর্চার (২১) কিছুটা মারকুটে ভূমিকা নিলেও তাতে কোনও সমস্যাই হয়নি।
শেষ পর্যন্ত ৬৮ রানে ম্যাচ জিতে থামল টিম ইন্ডিয়া। জয় নয়, একে বলে পর্যুদস্ত করা। এবার ফাইনালে সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপ থেকে মাত্র এক কদম দূরে রোহিতরা। সারা দেশ আশায় বুক বাঁধছে। বিশ্বকাপ ট্রফিটা ফিরে আসুক ভারতে।
TOP RELATED