‘এরপর তো আত্মঘাতী হওয়া ছাড়া আমার কাছে কোনও রাস্তা থাকবে না’: CCTV ফুটেজে মুখ প্রকাশ্ করায় ক্ষুব্ধ অভিযোগকারিণী!
এক্সপ্রেস কলকাতা ডেস্ক: সম্প্রতি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে রাজভবনের অন্দরে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছেন রাজভবনের এক মহিলা অস্থায়ী কর্মী। এই অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় হয়েছে রাজনৈতিক মহল। সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হোক - বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন শাসক দল। এরই মধ্যে সাধারণ মানুষের সামনে সেই ফুটেজ প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বুধবার রাজভবনের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে জানানো হয় যে বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার দিনের ফুটেজ প্রকাশ করা হবে। কিন্তু সেই ফুটেজে মুখ প্রকাশ্ করায় রাজ্যপালের নিন্দায় সরব হয়েছেন অভিযোগকারিণী। তাঁর অনুমতি না নিয়ে কী ভাবে পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হল? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ রাজভবনের তরফে ওই ঘটনার ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিটের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁর কথামতো ‘সাচ কা সামনা’য় আবেদনের ভিত্তিতেই ওই ফুটেজ বাইরে দেখানো হয়েছে। তবে সেই ভিডিও রাজভবনের অন্দর নয়, তিন ধাপে নর্থ গেটের সামনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে কোথাও দেখা যায়নি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে।
উল্লেখ্য, রাজভবনের নর্থ গেটের সামনের দু’টি ক্যামেরার রেকর্ডিং এ দিন দেখানো হয়। ১ ঘন্টা ১৯ মিনিটের ফুটেজ মোট তিনটি ধাপে দেখানো হয়েছে। প্রথম ফুটেজের সময় বিকেল ৫টা ৩১ মিনিট থেকে ৫টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত। দ্বিতীয় ফুটেজের সময় ৫টা ৩২ মিনিট থেকে ৬টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত। তৃতীয় ফুটেজটি সন্ধ্যা ৬টা ৩২ মিনিট থেকে ৬টা ৪১ মিনিট পর্যন্ত। কিন্তু ভিডিওতে প্রকাশ্যে মুখ দেখানোয় রাজ্যপালের নিন্দায় সবর অভিযোগকারিণী।
এ প্রসঙ্গে ওই মহিলা কর্মীর সংযোজন, ‘রাজ্যপাল মহাশয় নিজে এই রকম একটা কুরুচিকর কাজ করলেন। এখন আবার নিজের দোষ ঢাকার জন্য উনি হাস্যকর এক নাটক মঞ্চস্থ করলেন… আমি জানতাম ভারতীয় আইনে রয়েছে যে অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রেখে তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি আবার অপরাধ করলেন… এর পরেও কেউ কিছু করতে পারবে না। কারণ আমি সাধারণ মানুষ, আর তিনি রাজ্যপাল। ওঁর জন্য আমার এবং আমার পরিবারের যে সম্মানহানি হয়েছে এবং আজ আমার অনুমতি ছাড়া এই ফুটেজ প্রকাশ করে যে অসম্মানটা করলেন এরপর তো আত্মঘাতী হওয়া ছাড়া আমার কাছে কোনও রাস্তা থাকবে না। তবে যদি কোনও তদন্ত হয়...যদি সত্যিটা সামনে আসে...’।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘আমি সিসিটিভি ফুটেজের প্রযুক্তিগত দিক সম্পর্কে অবগত নই। কিন্তু আমি কাঁদতে কাঁদতে পুলিশ আউট পোস্টের দিকে যাচ্ছি, এটা দেখা যাচ্ছে। আমার ব্যাগ কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, রাজভবনের গাড়িতে বাড়ি যেতে। যাওয়ার পথে আমাকে বোঝানোর কথাও বলা হয়। এই হাস্যকর নাটক না করে উনি পুলিশকে তদন্তের অনুমতি দেওয়ার সাহস দেখাতে পারতেন! ওঁর কর্মচারীদের সত্যি কথা বলার জন্য অনুমতি দিতে পারতেন। কিন্তু ওই দানবের মনে এখন ‘চিত্ত আমার ভয়পূর্ণ, বিকৃত মম শির!’
উল্লেখ্য, শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠলে অভিযোগকারিণীর নাম বা তাঁর পরিচয় কোনওভাবেই লঙ্ঘন করা যায় না। রাজভবনের অস্থায়ী ওই কর্মীর অভিযোগ, রাজ্যপাল এই নিয়ম ভঙ্গ করে CCTV ফুটেজে তাঁকে দেখিয়েছেন। এই নিয়ে ফের একদফা বিতর্ক বাড়ল রাজনৈতিক মহলে।