এক্সপ্রেস কলকাতা ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের মাঝে স্বস্তির খবর পেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। অবশেষে তিহার জেল থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন তিনি। শুক্রবার আবগারি মামলায় আপ সুপ্রিমোর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট। চলতি লোকসভা নির্বাচনে প্রচারের জন্য তাঁকে আগামী ১ জুন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ। যদিও গণনার আগেই আগামী ২ জুন তাঁকে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), কেজরীওয়ালের জামিনের বিরোধিতা করেছিল। তবে শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘২১ দিনে খুব একটা পার্থক্য হবে না।’ কিন্তু এই ২১ দিন জেলের বাইরে থাকার জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ঠিক কী কী শর্ত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট? জেনে নিন।
১) আগামী ২ জুন আত্মসমর্পণ করতে হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে।
২) জামিন পেতে জেল সুপারিনটেনডেন্টকে ৫০,০০০ টাকার বন্ড জমা দিতে হবে কেজরিওয়ালকে। সাথে দিতে হবে সম পরিমাণ সিওরিটিও।
৩) জামিনে বাইরে থাকার সময়, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর এবং দিল্লি সচিবালয়ে যেতে পারবেন না।
৪) শুধুমাত্র দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের ছাড়পত্র বা অনুমোদন পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কোনও নথি ছাড়া অন্য কোনো সরকারি ফাইলে সই করতে পারবেন না অরবিন্দ কেজরিওয়াল। একান্তই তা করতে হলে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অনুমোদন প্রয়োজন পড়বে।
৫) দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলা সম্পর্কিত কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না তিনি।
৬) এই সময়কালে, এই দুর্নীতি মামলার কোনও সাক্ষীর সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রাখতে পারবেন না এবং মামলার সঙ্গে যুক্ত কোনও সরকারি ফাইলেও হাত দিতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ আবগারি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল কেজরীকে। তাঁর তরফে বর্ষীয়ান আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি আর্জি জানিয়েছিলেন যাতে ৪ জুন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আইনজীবী শাদান ফারাসত জানিয়েছেন, জামিনে থাকাকালীন কেজরীওয়াল কী বলবেন না বলবেন, তা নিয়ে কোনও বিশেষ নির্দেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। আগামিকাল, শনিবার সকাল থেকে তিনি যাতে প্রচারের কাজ শুরু করতে পারে, সেই সাংগঠনিক প্রস্তুতি শুরু করল আপ।
২৯ এপ্রিল থেকে এই মামলার শুনানি শুরু হয় শীর্ষ আদালতে। ৩ মে পর্যন্ত চলে শুনানি। বারবার গ্রেফতারির সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অভিষেক মনু সিংভি। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, ভোটের সময় দলের সুপ্রিমো জেলে থাকলে দল বঞ্চিত হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে তাঁকে সরিয়ে রেখে গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আইনজীবী।
আপ সুপ্রিমোর জামিনের খবরে খুশি হয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স হ্যান্ডলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, “I am very happy to see that Shri Arvind Kejriwal @ArvindKejriwal has got interim bail. It will be very helpful in the context of the current elections.” অর্থাৎ তাঁর মতে, নির্বাচনের মাঝে কেজরিওয়ালের জামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে।