CATEGORY games:

Card image cap

ভবানীপুরের কাছে আটকে গেল মোহনবাগান

কলকাতা লিগে আশা জাগিয়ে শুরু করতে পারল না মোহনবাগান । ভবানীপুরের  কাছে থেমে গেল সবুজ-মেরুন শিবির। নব্বই মিনিটের শেষে খেলার স্কোরলাইন বলছে মোহনবাগান ১ ভবানীপুর ১। তবে খেলার ফলাফল অন্যরকম হলেও হতেও পারত। ম্যাচে নজর কাড়ল ভবানীপুর। যদিও দিল্লি এখনও ঢের দেরি। কলকাতা লিগে এখনও ঢের ম্যাচ বাকি রয়েছে। সবে প্রথম ম্যাচ খেলল মোহনবাগান। লিগ যত গড়াবে, ততই উজ্জ্বল হবে টাইসন-সুহেলদের খেলা। ভক্ত-সমর্থকদের আশা এমনটাই।শিবাজিতের ফ্রিকিক থেকে মোহনবাগান এগিয়ে যাওয়ার পরে ভবানীপুরের হয়ে সমতা ফেরান জিতেন মুর্মু। ভাগ্য সহায় থাকলে এদিন জিতেন মুর্মু  একাই হ্যাটট্রিক করতে পারতেন। এতেই পরিষ্কার ম্যাচে ভবানীপুরের কতটা দাপট ছিল। শিশির ঘোষ, মানস ভট্টাচার্যের মতো প্রাক্তন ফুটবলাররা মনে করছেন, প্রথম ম্যাচেই ধাক্কা খেল মোহনবাগান। কোনওরকমে এক পয়েন্ট সংগ্রহ করল তারা। শেষ পাঁচ মিনিট ছাড়া মোহনবাগানের আক্রমণে সেই কামড় কোথায়! সুহেল-শিবাজিতরা কেন এত কুঁকড়ে থাকলেন? কেন তাঁদের ফুটবল দৃষ্টিনন্দন হল না? ঘটনা হল, ভবানীপুরের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেনি মোহনবাগান। একটা সময়ে প্রতিটি বিভাগেই মোহনবাগানের উপরে প্রাধান্য দেখিয়ে গিয়েছে ভবানীপুর। তাদের দলেও রয়েছেন কলকাতা ময়দানের পোড়খাওয়া সব ফুটবলাররা। বর্ষাস্নাত, ভিজে মাঠে কীভাবে খেলতে হয়, তা তাঁদের হাতের তালুর মতো জানা। সবুজ-মেরুন শিবির প্রথমে গোল করে এগিয়ে যায়। শিবাজিৎ সিং ফ্রি কিক থেকে এগিয়ে দেন মোহনবাগানকে। গোলটির ক্ষেত্রে ভবানীপুর গোলকিপার শংকর রায়ই দোষী। অতীতে শংকর রায় মোহনবাগানের গোল আগলেছেন। সেই তিনিই পাঁচিল সাজিয়ে নিজে দাঁড়ালেন মাঝমাঝি জায়গায়। শিবাজিতের বাঁক খাওয়ানো ফ্রিকিকের নাগালও পাননি তিনি।  
দিনের শুরু দেখে সবসময়ে বোঝা যায় না গোটা দিনটা কেমন যাবে। এই গোল হজম করার পরই ভবানীপুরের জার্সি আরও উজ্জ্বল দেখাতে শুরু করে। মোহনবাগান রক্ষণের বাঁ দিক ছিল তাদের মিসিং লিঙ্ক। আর ওই প্রান্ত দিয়েই বারংবার আক্রমণ করছিল ভবানীপুর। সইফুল-উমের-জোজো, এই থ্রি মাস্কেটিয়ার্স মিলে মোহনবাগানের রক্ষণে কাঁপুনি ধরাচ্ছিল। ডান দিক থেকেই গড়ানে ক্রস বিপদ ডেকে এনেছিল মোহনবাগানের পেনাল্টি বক্সে। কিন্তু সেই যাত্রায় অভিজ্ঞ জিতেন শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পেরে পড়ে যান। বলের সঙ্গেও সংযোগ ঘটাতে পারেননি। ফলে সমতা ফেরানোর সুযোগ নষ্ট করেন জিতেন।সেই জিতেনই ভবানীপুরের ত্রাতা হয়ে ধরা দেন। যদিও তাঁর গোলটার ক্ষেত্রে সবুজ-মেরুন রক্ষণের রক্তাল্পতাই চোখে পড়ল। ডান দিক থেকে উমেরের বাঁক খাওয়ানো সেন্টার বুঝতেই পারলেন না সবুজ-মেরুনের দুই সেন্টার ব্যাক সৌরভ ও সায়ন। বর্ষাভেজা মাঠে বল পড়লে তা আরও দ্রুতগতিতে ছুটে আসে। মোহনবাগানের দুই ডিফেন্ডার সেটাই উপলব্ধি করতে পারেননি। বল জিতেনের কাছে এলে তিনিও প্রথম টাচে ভালো করে বলটা ট্র্যাপ করতে পারেননি। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় জিতেন মোহনবাগানের জালে বল জড়িয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধে অন্য এক মোহনবাগানকে দেখা যাবে বলেই ধরে নিয়েছিলেন ভক্তরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ছবিটাও প্রথমার্ধের মতোই। ভবানীপুর একাধিকবার আক্রমণ শানায়। সবুজ-মেরুনের রক্ষণ কেঁপে গেলেও সেই সব আক্রমণ থেকে ভবানীপুর গোল করতে পারেনি। তবে শেষ পাঁচ মিনিট মোহনবাগান মরণকামড় দেয়। ততক্ষণে অবশ্য অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। এই তাগিদটা আরও আগে দেখাতে পারতেন টাইসন-সুহেল-শিবাজিতরা। কলকাতা লিগে শেষের দিকে তেড়েফুঁড়ে খেলে গোল করতে দেখা গিয়েছে অনেক দলকেই। এদিন আরও আগে থেকে জেতার খিদে দেখাতেই পারত মোহনবাগান। শংকরের পরিবর্ত হিসেবে নামা গোলকিপার প্রিয়ন্ত সজাগ থাকায় মোহনবাগান শেষমেশ তিন পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারেনি। ওইটুকু সময়তেই মোহনবাগানকে উজ্জ্বল দেখিয়েছে। বাকি সময়টায় ভবানীপুর ভেজা মাঠে ফুল ফুটিয়ে গেল। 

Card image cap

ভয়ঙ্কর দুর্যোগে আটকে রোহিত-কোহলিরা

ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে হারিকেন ঝড় ‘বেরিল। ফলে এখনই ঘরে ফেরা হচ্ছে না রোহিত-কোহলিদের। ঝড়ের দাপটে বন্ধ বিমানবন্দর। জারি হয়েছে কারফিউ। ফলে আপাতত হোটেল বন্দি ভারতের জাতীয় দলের সমস্ত ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ থেকে বোর্ড কর্তা, এমনকি সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও। ক্রিকেটার ও আটকে থাকা সাংবাদিকদের একই বিমানে দেশে ফেরানোর তৎপরতা শুরু করেছেন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ। তবে এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না, বিমানবন্দর কবে চালু হবে। ফলে পুরো ব্যাপারটাই  এখন অনিশ্চয়তার মোড়কে।শক্তি বাড়িয়েছে হারিকেন ‘বেরিল’। পরিণত হয়েছে ‘অতি ভয়ঙ্কর ক্যাটাগরি ফোর’ ঘূর্ণিঝড়ে। ল্য়ান্ডফলের সময় যার গতিবেগ প্রতি ঘণ্টার ১৩০ কিলোমিটার। ঝড়ের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে বার্বাডোজে। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, আমরা যে জায়গায় রয়েছি সেখানে এখন বৃষ্টি থেমেছে। রোদও উঠেছে। তবে বিমানবন্দর এখনও বন্ধ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখান থেকে উড়ান সম্ভব নয়। সূত্রের দাবি. বিসিসিআইয়ের তরফে একটি চাটার্ড বিমানের ব্য়বস্থা করার চেষ্টা চলছে। যাতে গোটা টিম ও সাংবাদিকদের দ্রুত অন্তত দিল্লি উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু কবে নাগাদ এর ব্যবস্থা হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। সূত্রের দাবি, ঝড়ের ফলে দেশজুড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। রোহিতদের হোটেল বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছেই বলে সূত্রের দাবি।বিশ্বকাপ ফাইনালে মাঠেই ছিলেন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ। ফলে তিনিও আটকে রয়েছে দুর্যোগ কবলিত দ্বীপরাষ্ট্রে। এদিন তিনি জানান, “আপাতত ক্রিকেটার, সাংবাদিক ও আধিকারিকদের দ্রুত দেশে ফেরানোই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। তার পর দেখা যাবে দেশের মাটিতে কীভাবে তাঁদের অভ্যর্থনা জানানো যায়।” প্রসঙ্গত, বড়সড় দুর্যোগে আটকে পড়েছেন রোহিতরা। হারিকেন ঝড় ‘বেরিল’-এর দাপটে এখনও বার্বাডোজেই আটকে কোচ দ্রাবিড়-সহ গোটা দল।

Card image cap

প্রধানমন্ত্রীকে ‘ধন্যবাদ’ জানালেন কোহলি

বার্বাডোজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বজয়ের পরেই এসেছিল সোশাল মিডিয়ায় বার্তা। শুধু সোশাল মিডিয়ায় বার্তা পাঠিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষান্ত হননি। টিম ইন্ডিয়ার সোনার ছেলেদের সঙ্গে ফোনে আলাদা করে কথাও বলেন।
টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির প্রশংসা করে এক্স হ্যান্ডলে লেখেন মোদি। এবার প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তাঁর সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিরাট কোহলি। বিরাটের দুর্দান্ত ইনিংসের প্রশংসা করে মোদি লিখেছেন, ”ফাইনালে তোমার ইনিংস আমার খুব ভালো লেগেছে। অ্যাঙ্করের ভূমিকায় তুমি দুরন্ত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট তোমাকে মিস করবে। আমি নিশ্চিত তুমি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।”
প্রধানমন্ত্রীর এহেন বার্তার জবাবে কোহলি লিখেছেন, ”ধন্যবাদ নরেন্দ্র মোদি স্যর। আপনার সমর্থন এবং উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ জানাই। এই দলের অংশ হওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। বিশ্বজয় সমগ্র জাতিকে যে আনন্দ দিয়েছে তাতে আমরা মুগ্ধ এবং একই সঙ্গে অভিভূতও।”দেশের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকেও আলাদা করে প্রশংসা করেছেন মোদি। এক্স হ্যান্ডলে অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে নিয়ে বিশেষ পোস্ট করেন মোদি। টি-২০ থেকে অবসর নেওয়ার পরে রোহিতকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি লেখেন, “তোমাকে দেখেই বোঝা যায়, সেরা কাকে বলে। তোমার আগ্রাসী মানসিকতা, ব্যাটিং, অধিনায়কত্ব ভারতীয় দলকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে। তোমার টি-২০ কেরিয়ার খুব স্মরণীয় হয়ে থাকবে।” রোহিতের সঙ্গে কথা বলে তাঁর খুব ভালো লেগেছে বলেও জানান মোদি।
প্রধানমন্ত্রীর এমন বার্তা পেয়ে অভিভূত হয়ে পড়েছেন ভারত অধিনায়ক। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “আপনার হৃদয়স্পর্শী বার্তার জন্য অনেক ধন্যবাদ। কাপ নিয়ে দেশে ফিরতে পেরে আমি এবং আমার দল খুবই গর্বিত। বিশ্বকাপ জয় যেভাবে সকলকে আনন্দিত করেছে, সেই দেখেও আমরা অভিভূত।” তবে বিশ্বকাপ জিতলেও এখনই দেশে ফিরতে পারছে না চ্যাম্পিয়ন দল। ঘূর্ণিঝড় বেরিলের দাপটে আপাতত হোটেলবন্দি বিরাট কোহলিরা।

Card image cap

টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর জাদেজারও

 টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর বিদায়ের ঢল। গতকালই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলি। এবার সরে দাঁড়ালেন রবীন্দ্র জাদেজাও। 
চলতি বিশ্বকাপে সেভাবে সফল হতে পারেননি জাড্ডু। কিন্তু তিনি মাঠে থাকা মানে ফিল্ডিংয়ে রান অবশ্যই বাঁচাবেন। দুরন্ত ক্যাচ নিয়ে মুহূর্তের মধ্যে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু এবার আর টি-টোয়েন্টিতে জাদেজার তলোয়ার চালানো দেখতে পাবেন না ক্রিকেটভক্তরা। বিরাট-রোহিতের অবসর ঘোষণার ধাক্কা কাটতে না কাটতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন ভারতীয় দলের অলরাউন্ডার।সোশাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, “আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিচ্ছি। সকলকে হৃদয় থেকে ধন্যবাদ। আমি সবসময় দেশের হয়ে সবটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অন্য ফরম্যাটগুলোতেও সেটা করব। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা আমার কাছে স্বপ্ন ছিলও। আমার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির শেষ লক্ষ্য। অসংখ্য স্মৃতি, আনন্দ আর সমর্থনের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানাই।”দেশের জার্সিতে তিনি ৭৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। শিকার করেছেন ৫৪টি উইকেটে। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৫১৫ রান। তার সঙ্গে অসাধারণ ফিল্ডিং। লোয়ার অর্ডারে নেমে ঝড় তুলতেও জুড়ি মেলা ভার। অবশেষে বিশ্বজয়ের সাফল্য মাথায় নিয়েই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির দুনিয়াকে বিদায় জানালেন তিনি।

Card image cap

বিরাট অঙ্কের অর্থপ্রাপ্তি টিম ইন্ডিয়ার

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে দেশবাসীর স্বপ্নপূরণ করেছেন রোহিতরা। শুভেচ্ছাবার্তায় ভেসে যাচ্ছেন টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেটাররা। এবার তার সঙ্গে বিরাট আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করলেন জয় শাহ। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ভারতীয় দলের জন্য ১২৫ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা জানালেন বিসিসিআই সেক্রেটারি।
ফাইনালে মাঠে উপস্থিত ছিলেন জয় শাহ। তাঁর হাত থেকেই ট্রফি তুলে নেন রোহিত শর্মা। আর এদিন টিম ইন্ডিয়ার জন্য রইল বিশেষ উপহার। ১২৫ কোটি টাকা দেওয়া হবে বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে। সেই খবর জানিয়ে জয় শাহ সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪ জেতার জন্য টিম ইন্ডিয়াকে ১২৫ কোটি টাকা দেওয়া হবে। এই দলটা অসাধারণ প্রতিভা, তাগিদ আর খেলোয়াড়ি মনোভাবে পরিপূর্ণ। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই সেটা দেখা গিয়েছে। সকল প্লেয়ার, কোচ আর সাপোর্ট স্টাফদের অভিনন্দন জানাই এই অসাধারণ সাফল্যের জন্য।”
তবে কে কত টাকা পাবেন, তা আলাদা করে ঘোষণা করা হয়নি। সকলে সমানভাগ পাবেন কিনা, সেটাও স্পষ্ট নয়। তবে যেটাই হোক না কেন, রোহিত-বিরাটরা বিশ্বকাপ জয়ের জন্য অর্থ পাবেন তার সঙ্গে জুড়ে যাবে এই অঙ্ক। বিশ্বজয়ীদের জন্য আইসিসি দেবে ২০.৪২ কোটি টাকা। আর তার সঙ্গে বাড়তি বিসিসিআইয়ের পুরস্কার। উল্লেখ্য, গত মাসে আইপিএল শেষ হওয়ার পর মাঠকর্মীদের জন্যও আর্থিক পুরস্কার দিয়েছিল বিসিসিআই।

Card image cap

টি-২০ থেকে অবসর বিরাট-রোহিতের

এই দিনটা দেখার জন্য অপেক্ষা করেছিল গোটা ভারতবর্ষ। বাকি দল তো বটেই, রোহিত-বিরাটের হাতে বিশ্বকাপ। দুজনের হাতেই একটা করে ট্রফি দেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব। কিন্তু পড়ন্তবেলায় কি রাজার বেশে বিদায় নেবেন না দুজনে? সেই স্বপ্নপূরণ হল অবশেষে। জয়ী হয়েই টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় ঘোষণা বিরাট- রোহিতের। আর কোনও দিন দেশের হয়ে কুড়ি-কুড়ির ম্যাচে নামবেন না দুজনে। শুধু থেকে যাবে অসংখ্য স্মৃতি, অসংখ্য স্বপ্নের মুহূর্ত। জয়ের আনন্দের মধ্যেও বাজছে বিদায়ের মূর্ছনা।ভারতীয় ক্রিকেটে কিংবদন্তির অভাব নেই। যুগের পর যুগ কেটেছে। নায়কের আসন কখনও শূন্য থাকেনি। সারা দেশ মেতেছে বীরবন্দনায়। আবার সময়ের স্রোত বেয়ে ‘প্রাক্তন’ তকমা জুড়েছে তাঁদের নামের আগে। সেরকমই এক যুগের সন্ধিক্ষণে ফের দাঁড়িয়ে ভারতের ক্রিকেটভক্তরা।মনে পড়তে পারে, শচীনের অবসরের মূহূর্ত। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেদিন প্রত্যেকের চোখে জল, কেঁদেছিল গোটা দেশ। না, রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলি  সে জায়গায় দাঁড়িয়ে নেই। এখনও অনেকদিন তাঁরা মুগ্ধ করবেন ক্রিকেটবিশ্বকে। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে আর কখনও দেখা যাবে তাঁদের। পরের মেগা টুর্নামেন্ট দেশের মাটিতে। যদিও শ্রীলঙ্কাও রয়েছে আয়োজক দেশ হিসেবে। ২০২৬ সালে রোহিতের বয়স দাঁড়াবে ৩৯। আর বিরাটের ৩৭। ফর্ম, ফিটনেসের যদি-কিন্তু পেরিয়েও তাঁরা যে ফের দেশের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামবেন না, সেটা আজই পরিষ্কার হয়ে গেল।প্রথমে বিদায় জানালেন কিং কোহলি, সেই ধাক্কার কিছুক্ষণ পরেই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর হিটম্যানের।ক্রিকেটভক্তদের তৈরি ছিলেন না এটার জন্য। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একের পর এক দুরন্ত ইনিংস, ম্যাচ জেতানো হুঙ্কার আর দেখা যাবে না। স্মৃতির সরণী বেয়ে পিছনে চলে যাওয়া যেতে পারে ২০২২-র বিশ্বকাপে। ৩১/৪ হয়ে গিয়ে হারতে থাকা ম্যাচকে প্রায় একার হাতে জিতিয়েছিলেন বিরাট। বিশ্বকাপের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইনিংস বললেও ভুল বলা হয় না। ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখা যায় হ্যারিস রউফের বলে ব্যাক ফুটে লং অফে ছয়ের মুহূর্ত। তার আগে ২০১৬ সাল ছিল টি-টোয়েন্টিতে তাঁর স্বপ্নের বছর। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৫১ বলে ৮২ করে ভারতকে জয় এনে দিয়েছিলেন। মনে পড়তে পারে ২০১৪-র বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪২ বলে ৭৪ রানের ঐতিহাসিক ইনিংস। আর এবার সেভাবে ফর্মে ছিলেন না। কিন্তু সঠিক সময়ে জ্বলে উঠলেন। ফাইনালে করলেন ৭৬ রান। আর হিটম্যান? রেকর্ডের পাহাড় তৈরি করা যাঁর নিয়মিত কাজ। একেবারে গোড়া থেকেই শুরু করা যাক। ২০০৭-র বিশ্বকাপে ৪০ বলে ৫০ রান করেছিলেন প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে। সেই শুরু। তার পর প্রতিটা বিশ্বকাপেই একের পর এক অসাধারণ ইনিংস উপহার দিয়েছেন তিনি। ২০২১-এ আফগানিস্তানের সঙ্গে ৪৭ বলে করেছিলেন ৭৪ রান। কে ভুলতে পারে ২০১০-এ অস্ট্রেলিয়ার সামনে তাঁর মরিয়া লড়াই। ৪৬ বলে ৭৯ রান করেও ম্যাচ জেতাতে পারেননি রোহিত। আর চলতি বিশ্বকাপে যেন সবকিছুর ‘বদলা’ নিলেন। সুপার এইটে সেই অস্ট্রেলিয়াকেই হারালেন। ৪১ বলে ৯২ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে দিলেন। এতো শুধু বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান। সার্বিক হিসেব-নিকেশ ধরলে আকাশ ছুঁয়ে ফেলবেন তাঁরা। এর আগে ২০০৭-এ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিলেন রোহিত। ২০১১-র বিশ্বসেরা ট্রফি উঠেছিল বিরাটের হাতে। কিন্তু দুজনে একসঙ্গে কখনই শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পাননি। এবার সেটা হল। কিন্তু বিশ্বজয়ের মাঝেও যে বিদায়ের রিনরিনে সুর। দেশের হয়ে আর টি-টোয়েন্টি খেলবেন না বিরাট আর রোহিত। পরের বিশ্বকাপে আর থাকবেন না দুজন। নতুনদের হাতে ব্যাটন উঠবে। ভারতের জয়রথ থামবে না। কিন্তু ক্রিকেট সমর্থকদের কাছে থেকে যাবে একরাশ স্মৃতি। হারজিতের সমীকরণ পেরিয়ে ভারতের ক্রিকেটে দুজনের চিরস্থায়ী আসন পাতা।

Card image cap

দীর্ঘ যাত্রাপথের বৃত্ত সম্পূর্ণ করলেন রাহুল দ্রাবিড়

২৩ মার্চ, ২০০৭। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ভারতের স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটেছিল।


২৯ জুন, ২০২৪। সেই ক্যারিবিয়ান ভূমেই বিজয়কেতন উড়ল।

দুটো দিনের মধ্যে প্রায় সতেরো বছরের ব্যবধান। কিন্তু কান্না-হাসি, দুঃখ-সুখ এসে মিশে গেল এক বিন্দুতে।একদিন যে ভূমিতে হেরে প্রস্থান ঘটেছিল, সেখানেই জুটল চ্যাম্পিয়নের বরমাল্য।


জীবন এরকমই। একদিকে সে সব ছিনিয়ে নেয়, নিঃস্ব করে দেয়। সেই আবার ফিরিয়ে দেয় দুহাত ভরে। জীবনের এই খেলা ভারতীয় দলের হেডস্যর রাহুল দ্রাবিড়ের থেকে ভালো আর কে জানেন! তিনি ভূয়োদর্শী। দীর্ঘ ক্রিকেটজীবনে উত্থান দেখেছেন। দেখেছেন পতনও। সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতার কদর্য রূপও দেখা হয়ে গিয়েছে তাঁর।


আজ শনিবার বার্বাডোজের মাটিতে তাঁর দলের ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মার হাতে যখন কাঙ্খিত কাপটা উঠছে, রাহুল দ্রাবিড়  কি অতীতে অবগাহন করছিলেন? নাকি বর্তমানকে আঁকড়ে ধরেছিলেন তিনি?

২০০৭ বিশ্বকাপের (৫০ ওভারের বিশ্বকাপ) আসর বসেছিল লয়েড-স্যর ভিভের ওয়েস্ট ইন্ডিজে।রাহুল দ্রাবিড়ের হাতেই ছিল অধিনায়কের আর্মব্যান্ড। গুরু গ্রেগ ভারতীয় দলের কোচের হট সিটে। টিম ইন্ডিয়ার ধারণা তখনও শাখাপ্রশাখা বিস্তার করেনি। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে ভারতীয় ক্রিকেটে কত ঘটনাই না ঘটেছে! মেগা মঞ্চে বিপর্যয় ঘটে দ্রাবিড়-সভ্যতার। প্রথমে বাংলাদেশ, পরে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে স্বপ্নের সলিলসমাধি ঘটে ভারতের। রাতের অন্ধকারে, পুলিশি প্রহরায় সোনার ছেলেরা থমথমে মুখে দেশে পা রাখেন।

সেদিন থেকে কোনও এক মহেন্দ্র সিং ধোনি বিশ্বজয়ের বীজ বুনেছিলেন মনের ভিতরে। রাহুল দ্রাবিড় নিশ্চয় সেসব অভিশপ্ত দিনের স্মৃতি মনে রাখেননি! অবশ্য রাখেননি বা বলি কীভাবে! ওই দুঃসময়ে হয়তো তিনি শপথ নিয়েছিলেন, এগিয়ে যেতে হবে।চ্যালেঞ্জ যতই আসুক, তা অতিক্রম করতে হবে।তাঁর তূণের অস্ত্র সততা, নিষ্ঠা এবং পরিশ্রম। ওই তিন অস্ত্রের সাহায্যেই কোচিং জীবনের শেষ স্টেশনে এসে ন্যায়বিচার পেলেন রাহুল দ্রাবিড়।

মনে পড়ে যাচ্ছে, তাঁরই বিখ্যাত সেই মন্তব্য, ”আশা ছাড়তে নেই। আপনি যে জিনিসে ভাল তাকেই আঁকড়ে ধরতে হয়।আপনি যেটা ভাল পারেন সেটা মনপ্রাণ দিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে করুন। দেখবেন হয়তো কোথাও একটা

ন্যায়বিচার অপেক্ষা করে আছে। আসবেই এমন গ্যারান্টি নেই।কিন্তু আপনাকে পড়ে থাকতে হবে নিজের নিষ্ঠা নিয়ে।”


সততা, সংকল্পের আরেক নাম রাহুল দ্রাবিড়।ভারতীয় ক্রিকেটে দ্রাবিড়-জমানা শুরু হওয়ার পরে তাঁর দল বারংবার ব্যর্থ হয়েছে মেগা ইভেন্টে।সমালোচক, নিন্দুকদের নখ-দাঁতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন তিনি কিন্তু লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি।নিরলসভাবে করে গিয়েছেন নিজের কাজ।জানতেন একদিন সূর্য উঠবেই। অন্ধকার রাতের শেষে নতুন ভোর আসবেই।আজ সেই দিন।

কোচ দ্রাবিড় কি ছাপিয়ে গেলেন ক্রিকেটার দ্রাবিড়কেও? এনিয়ে তর্ক চলতেই পারে। ক্রিকেটার জীবনে অবিশ্বাস্য সব ইনিংস খেলেছেন তিনি।রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া সব বোলারদের শান্ত করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের মিস্টার ডিপেনডেবল। তাঁর রক্ষণ ভাঙতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হত প্রতিপক্ষ বোলারদের। কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে তিনি ভারতীয় ক্রিকেটে থেকে গিয়েছেন পার্শ্বচরিত্র হয়েই। বড় খেতাবও তিনি জেতেননি। দলের ক্যাপ্টেন হিসেবেও তিনি একনম্বর নন।২ নম্বর জার্সির আসল মালিক বোধহয় তিনিই।মহেন্দ্র সিং ধোনি বলতেন, দেড়শো কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসা বল যখন ডিফেন্স করে রাহুল দ্রাবিড়, তখন সেটা আগ্রাসন নয়? বোলার ভিতরে ভিতরে ধ্বংস হয়ে যায়।


ভিতরে ভিতরে ধ্বংস হয়ে যায়।

সেই রাহুল দ্রাবিড় হেডস্যর হয়ে রোহিত-ব্রিগেডকে বোধহয় জীবনের শিক্ষাই দিয়েছেন।নইলে ব্যর্থতার সঙ্গী হওয়া একটা দলকে নিয়ে কোচিং জীবনের শেষ স্টেশনে এসে কীভাবে এমন জয় সম্ভব! ফাইনাল ম্যাচ পেন্ডুলামের মতো দুলল।চাপ যখন প্রবল হয়ে শ্বাসরোধ করার উপক্রম করছে, তখনও হাল ছাড়েননি রোহিতরা।বিশ্বজয়ের আনন্দে রাহুল দ্রাবিড়কেও দেখা গেল শূন্যে ঘুসি ছুড়তে। কাপ হাতে নিয়ে উল্লাস করতে।

ফাইনালের  আগে রাহুল দ্রাবিড়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, ”আমার জন্য কাপ জেতার দরকার নেই। দলের একটা কাপ দরকার। সেটাই জিতুক।” টিম ইন্ডিয়া ভুবনজয়ী।২০০৭ সালের পরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভারত আবার বিশ্বসেরা।দ্বিপাক্ষিক সিরিজে রাজা আর আইসিসি টুর্নামেন্ট এলেই ফকির, এই ধারণা যখন কলকাতা থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে, তখনই রাহুল দ্রাবিড়ের ভারত সেই ধারণাকে ক্যারিবিয়ান সাগরের জলে ভাসিয়ে দিল।

রাহুল দ্রাবিড় প্রমাণ করলেন তিনিই ভারতীয় ক্রিকেটের মিস্টার ডিপেনডেবল। তাঁর হাতেই সুরক্ষিত ছিল ভারতীয় ক্রিকেট।সব ভালো জিনিসেরই একদিন শেষ হয়।বিশ্বকাপের বল গড়ানোর আগে থেকে উচ্চকিত সুরে বাজছিল রাহুল দ্রাবিড়ের বিদায়ের রিংটোন।এদিনই তাঁর ভারতীয় দলের হেডস্যর হিসেবে শেষদিন। আগামিকাল থেকে তিনি প্রাক্তনের দলে।সরে যাওয়ার আগে রাহুল দ্রাবিড় যেন পূণ্যস্নান করলেন। ব্যর্থতা থেকে সাফল্য, দীর্ঘ যাত্রাপথের একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করলেন।


Card image cap

আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত

টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্কোর তুলেছিল ভারত। তবু কুইন্টন ডি'কক, হেনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলারের আগ্রাসী ব্যাটিং স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি ভারতীয় দলকে। শেষ পর্যন্ত মুশকিল আসান হয়ে হাজির হলেন শীত গ্রীষ্ম বর্ষায় ভারতীয় বোলিংয়ের ভরসা যশপ্রীত বুমরা। ১৮তম ওভারে বল করতে এসে খরচ করলেন মাত্র ৪ রান। সঙ্গে তুলে নিলেন মার্কো জানসেনের উইকেট। সেখানেই ঘুরে গেল ম্যাচের মোড় দক্ষিণ আফ্রিকা ফের প্রমাণ করে দিল, কেন তাদের বিশ্ব ক্রিকেটের চোকার্স বলা হয়। ভারতের ১৭৬/৭ স্কোর তাড়া করতে নেমে একটা সময় ২৪ বলে ২৬ রান দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। ক্রিজে বিধ্বংসী ফর্মে থাকা হেনরিখ ক্লাসেন। সঙ্গে ডেভিড মিলার। অতি বড় ভারত সমর্থকও ভাবতে পারেননি যে, সেখান থেকে ৭ রানে ম্যাচ জিতবে ভারত। শেষ পর্যন্ত সেটাই সম্ভব হল ভারতীয় বোলারদের জন্য। ১৭তম ওভারে বল করতে এসে শুরুতেই ভয়ঙ্কর ক্লাসেনকে (২৭ বলে ৫২ রান) ফেরালেন হার্দিক। সেই ওভারে খরচ করলেন মাত্র ৪ রান।

তবু তখনও বিপদ কাটেনি। তিন ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার চাই ২২ রান। ক্রিজে তখনও বিপজ্জনক ডেভিড মিলার। রোহিত শর্মা বল তুলে দিলেন সেরা অস্ত্র যশপ্রীত বুমরার হাতে। এটা জেনেও যে, বুমরার ওই একটা ওভারই বাকি। আর সেই ওভারেই কামাল আমদাবাদের পেসারের। মাত্র ২ রান খরচ করলেন ওই ওভারে। তুলে নিলেন জানসেনকে। আচমকাই দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য দাঁড়ায় ২ ওভারে ২০। চাপ বাড়ছিল। সেই চাপেই শ্বাসরুদ্ধ করলেন অর্শদীপ সিংহ। ১৯তম ওভারে মাত্র ৪ রান খরচ করলেন। শেষ ওভারে হার্দিকও স্নায়ুর চাপ সামলে কাজের কাজ করে গেলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা আটকে গেল ১৬৯/৮ স্কোরে। 


Published on 2024-06-30 12:42 AM
Card image cap

ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত

গায়ানার আবহাওয়ার মতোই কি অবস্থা নয় ভারতের ক্রিকেটভক্তদের? এক-একটা আইসিসি টুর্নামেন্ট আসে, আর প্রত্যেকবার খুব কাছ থেকে বেরিয়ে যায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন। গত বছরের বিশ্বকাপ আজও মনভার করে দেয় সমর্থকদের। তবু একটা স্বপ্ন, একটা আশা নিয়ে ফের রোহিত-বিরাট-বুমরাহদের দেখতে বসা। আর সেই অপূর্ণ স্বপ্নের দিকে আর একবার এগিয়ে এল টিম ইন্ডিয়া। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তারা ইংল্যান্ডকে হারাল ৬৮ রানে। ছিনিয়ে নিল ফাইনালের টিকিট।
বৃষ্টিবিঘ্নিত সেমিফাইনালে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেয় ইংল্যান্ড। মেঘ কেটে তখন রোদ উঠেছে গায়ানায়। কোহলি ও রোহিত মারমুখী মেজাজেই শুরু করেছিলেন। টপলির বলে দুর্দান্ত ছক্কা মারার পর পরই আড়াআড়ি ব্যাট চালিয়ে বোল্ড হয়ে যান ‘কিং’। বিশ্বকাপে খারাপ ফর্ম অব্যাহত রইল কোহলির (৯)। কিন্তু হিটম্যান থাকতে চিন্তা কীসের! আগের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যেখানে শেষ করেছিলেন, এদিন সেখান থেকেই শুরু করলেন। শর্ট মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়ে ঋষভ পন্থ (৪) ফিরে গেলে সূর্যকুমারকে সঙ্গে নিয়ে তিনিই খেলার হাল ধরেন। দুই ব্যাটার যখন খেলাটা ভারতের দিকে এনে ফেলেছেন, তখন ফের নামল বৃষ্টি। ম্যাচ পিছিয়ে গেল আরও কিছুক্ষণ। ফের যখন শুরু হয় রোহিতদের একই রকম সপ্রতিভ লাগছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত রোহিত (৫৭) অর্ধশতরান করে ফিরে গেলে সূর্যও ফেরেন ৪৭ করে। চারটি বাউন্ডারি ও দুটি ছক্কার ইনিংসটিও অসাধারণ। তার পর হার্দিক পাণ্ডিয়া (২৩) বড় ইনিংসের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি আর শিবম দুবে (০)  পর পর আউট হওয়ার পরই পরিষ্কার হয়ে যায় খুব বড় স্কোর হচ্ছে না। ভারত শেষ করল ৭ উইকেটে ১৭১ রানে। 
বৃষ্টিভেজা মাঠে কি সেই রানটা যথেষ্ট? সেই প্রশ্নটাই ঘুরছিল প্রথম ইনিংসের পর। কিন্তু যাঁদের কাছে জশপ্রীত বুমরাহ রয়েছেন, তাঁরা সব অসম্ভবকেই সম্ভব করতে পারে। সঙ্গে তিনজন স্পিনার। যেখানে লিয়াম লিভিংস্টোনের বল একহাত করে ঘুরছে, সেখানে তো অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদবরা ঘূর্ণি দেখাবেন। আর সেটাই ঘটল। অক্ষর প্যাটেলকে আনতেই ম্যাজিক! ইংল্যান্ড ব্যাটারদের কাছে বিষয়টা দাঁড়াল শুধু যাওয়া-আসা। একের পর উইকেট তুলে গেলেন অক্ষর (২৩/৩)। ম্যাচের সেরাও তিনি। অন্যদিকে নিজের কাজ করে গেলেন বুমরাহ (১২/২)। শুরুটা ভালো করেও থেমে যেতে হল বাটলার (২৩), সল্টদের (৫)। একই অবস্থা হল মইন আলি (৮), বেয়ারস্টদেরও (০)। একদিকে চেষ্টা করছিলেন হ্যারি ব্রুক (২৫)। ঠিক তখনই ঘাতক হয়ে উঠলেন কুলদীপ (১৯/৩)। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে সোজা বোল্ড হলেন ইংরেজ ব্যাটার। ওখানেই শেষ ইংল্যান্ডের আশা-ভরসা। বাকি জোফ্রা আর্চার (২১) কিছুটা মারকুটে ভূমিকা নিলেও তাতে কোনও সমস্যাই হয়নি।
শেষ পর্যন্ত ৬৮ রানে ম্যাচ জিতে থামল টিম ইন্ডিয়া। জয় নয়, একে বলে পর্যুদস্ত করা। এবার ফাইনালে সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপ থেকে মাত্র এক কদম দূরে রোহিতরা। সারা দেশ আশায় বুক বাঁধছে। বিশ্বকাপ ট্রফিটা ফিরে আসুক ভারতে। 

Card image cap

কে থাকল দলে আর কে পড়ল বাদ?

  বৃহস্পতিবার টি-২০ বিশ্বকাপের মেগা সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও ইংল্যান্ড। ম্যাচটি ভারতীয় সময় ২৭ জুন রাত ৮টা থেকে গায়ানায় হবে মেগা ম্যাচ। রোহিত শর্মা র জস বাটলারের দলের দ্বৈরথ ঘিরে চড়ছে পারদ।


  ২০২২ টি-২০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হেরেই বিদায় নিতে হয়েছিল ভারতকে।


ফলে আরও একটি বদলার ম্যাচ ভারতের সামনে। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নকে নকআউট করেই ফাইনালের পথে পা বাড়াতে বদ্ধপরিকর টিম ইন্ডিয়া।


  ২০২৪ টি-২০ বিশ্বকাপে গায়ানায় এখনও পর্যন্ত মোট ৫টি ম্যাচ হয়েছে। ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য গায়ানার পিচকে একেবারেই বলা যাবে না। প্রথম ইনিংসের গড় স্কোর হল ১৪৬। তিনটি খেলা প্রথম ব্যাট করা দল জিতেছে, আর দুটি দল তাড়া করে জিতেছে। পিচ মন্থর হওয়ায় টস গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হবে। প্রথমে ব্যাটিং করাই সুবিধা এখানে।



সেমিফাইনালে ভারতীয় দলের প্রথম একাদশ কেমন হবে তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। বিরাট কোহলির লাগাতার অফ ফর্ম, শিবম দুবে তেমন একটা নজর কাড়তে না পারা ও জাদেজাও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি এই টি-২০ বিশ্বকাপে। ফলে প্রথম একাদশে বদল হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা একটা থেকেই যাচ্ছে।


এক ঝলকে দেখে নিন ভারতের সম্ভাব্য একাদশ: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল / শিবম দুবে, বিরাট কোহলি, ঋষভ পন্থ (উইকেটকিপার), সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা / যুজবেন্দ্র চাহল, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, জসপ্রীত বুমরাহ, অর্শদীপ সিং।


অপরদিকে, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড আরও একবার ফাইনালের খুব কাছে। ইংল্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটিং যে কোনও দলের রাতের ঘুম কেড়ে নিতে। গত টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিতে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিল ব্রিটিশরা। সেই পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি চাইছে জস বাটলারে দল।


এক ঝলকে দেখে নিন ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ: জস বাটলার (উইকেটকিপার, অধিনায়ক), জনি বেয়ারস্টো, হ্যারি ব্রুক, মঈন আলি, লিয়াম লিভিংস্টোন, স্যাম কুরান, ক্রিস জর্ডান, জোফ্রা আর্চার, আদিল রাশিদ, রিসি টপলে।

Card image cap

বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা

এতদিন সফরটা চলছিল রূপকথার মতো। সেমিফাইনালে এসে সেই স্বপ্নের উড়ান বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে আছড়ে পড়ল। ‘চোকার্স’ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেন রশিদ খানরা। ফাইনালের হারটাও হল একতরফা ভাবে ৯ উইকেটে। এই প্রথম কোনও বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলবেন প্রোটিয়ারা। 
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠলেও ব্যাটাররা শুরু থেকেই ভুগিয়েছে আফগানিস্তানকে। দুই ওপেনার ছাড়া মিডল অর্ডারের কোনও ব্যাটার গোটা টুর্নামেন্টেই নজর কাড়তে পারেননি। সেমিফাইনালে ত্রিনিদাদের সুইং সহায়ক পিচে দুই ওপেনার ব্যর্থ হতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আফগান ব্যাটিং বিভাগ। সেমিফাইনালের মতো মেগা ম্যাচে গুরবাজরা অল আউট হয়ে যান মাত্র ৫৬ রানে। হ্যাঁ পিচে সুইং ছিল, খানিকটা অপ্রত্যাশিত বাউন্সও ছিল। কিন্তু এমন কোনও জুজু ছিল না যে ৫৬ রানে অলআউট হয়ে যেতে হবে। গোটা আফগান ব্যাটিং বিভাগে দুই অঙ্কের রানে পৌঁছলেন মাত্র একজন। তিনি আজমতুল্লাহ ওমরজাই। তাঁর সংগ্রহ ১০। আর কেউ দশের গণ্ডিও পেরোননি। প্রোটিয়াদের হয়ে অনবদ্য বোলিং করেন শামসি (৩-৬), জ্যানসেন (৩-১৬), রাবাদা (২-১৪), নখিয়ারা (২-৭)।
টার্গেট মাত্র ৫৭ রান। দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিশেষ বেগ পেতে হবে না বোঝাই গিয়েছিল। যদিও প্রথম তিন ওভার বল হাতে কার্যত আগুন ঝরান ফারুকি এবং নবীন উল হক। এর মধ্যে ডি’ককের উইকেটও তুলে নেন ফারুকি। কিন্তু মাত্র ৫৬ রানের পুঁজি নিয়ে অন্তত সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষকে বেগ দেওয়া যায় না। আফগানরাও পারেননি। মাত্র ৮ ওভার ৫ বলে ১ উইকেট খুইয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রেজা হেনড্রিকস ২৯ এবং এইডেন মারক্রাম ২৩ রান করেন। টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রোটিয়ারা। এই প্রথম কোনও বড় টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলবে বিশ্ব ক্রিকেটে ‘চোকার্স’ তকমা পাওয়া দলটি। এর আগে বার দুই টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিতে আটকাতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আর আফগানিস্তান, হয়তো ফাইনাল খেলা হল না তাঁদের। কিন্তু যেভাবে অদম্য লড়াই করে শেষ চারে উঠেছিলেন রশিদ খানরা, সেটা বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরা থাকলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত একটা দেশ যেভাবে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের মেলে ধরল, সেটা আরও অনেককে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়ে দেবে।

Card image cap

পোল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করে ইউরোর নকআউটে ফ্রান্স

 ইউরো কাপের গ্রুপ ডি-তে রোমহর্ষক সমাপ্তি। একই সঙ্গে জোড়া ম্যাচ। দুটিতেই অপ্রত্যাশিত ফলাফল। যা বদলে দিল পুরো গ্রুপের সমীকরণ। পোল্যান্ডের কাছে অনায়াসে জিতবে ফ্রান্স, ফুটবলপ্রেমীদের সেই প্রত্যাশা অনেকটা ভুল প্রমাণিত করে বিশ্বকাপের রানার্স আপ দলকে আটকে দিল পোল্যান্ড। তবে ১-১ গোলে ড্র করেও নকআউটে চলে গেলেন এমবাপেরা। অন্য ম্যাচে রীতিমতো অঘটন ঘটে গেল। অপ্রত্যাশিতভাবে অস্ট্রিয়ার কাছে হেরে নেদারল্যান্ডসের নকআউট ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে গেল। যদিও সেরা তৃতীয় দল হিসাবে শেষ পর্যন্ত নকআউটে চলে যেতে পারে ডাচরা। এদিন ডাচদের বিরুদ্ধে অস্ট্রিয়া জিতল ৩-২ গোলে। চমকপ্রদভাবে ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের গ্রুপ থেকে গ্রুপে শীর্ষস্থান পেল অস্ট্রিয়া। 
চলতি ইউরোয় ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে গোলমুখে ব্যর্থতা। দলে বহু বিশ্বমানের ফরওয়ার্ড, সুযোগও তৈরি হচ্ছে বহু। কিন্তু গোল আসছে না। সেটাই এদিনও ভোগাল কন্তেদের। প্রথমার্ধে গোল করার বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। এমনকী এমবাপে নিজেও সুযোগ পান। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। গোলমুখ খুলতে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট দলকে অপেক্ষা করতে হয় ৫৬ মিনিট পর্যন্ত। তাও পেনাল্টি স্পট থেকে গোল করেন এমবাপে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেই লিড ধরে রাখতে পারেননি ফরাসিরা। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেই সমতা ফেরায় পোল্যান্ড। পোলিসদের হয়ে গোল পেয়ে যান লেওয়নডস্কি। ম্যাচ শেষ হয় ১-১ গোলে।
এদিকে নেদারল্যান্ডস-অস্ট্রিয়া ম্যাচে আবার উলটো ছবি দেখা গেল। ফুটবল যে গোলের খেলা বুঝিয়ে দিয়ে গেল দুই দল। এই ম্যাচে গোল এল পাঁচটি। ৩টি অস্ট্রিয়ার পক্ষে আর দুটি নেদারল্যান্ডসের পক্ষে। অস্ট্রিয়ার পক্ষে প্রথম গোলটি অবশ্য আসে ডাচ ডিফেন্ডার মালেনের পা থেকে। আত্মঘাতী গোল করে দলকে চাপে ফেলে দেন তিনি। সেই গোল প্রথমার্ধে শোধ করতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে গোল শোধ করেন গাকপো। কিন্তু ৫৯ মিনিটে ফের গোল করেন অস্ট্রিয়ার রোমানো। সেই লিডও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৭৫ মিনিটে ফের সমতা ফেরান ডিপে। কিন্তু মিনিট পাঁচেক বাদে ফের অস্ট্রিয়াকে এগিয়ে দেন মার্সেল সবিৎজার। সেটিই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়। ৩-২ গোলে জেতে অস্ট্রিয়া।

Card image cap

সেমিতে না খেলে ডায়রেক্ট ফাইনাল চলে যাবে ভারত! কীভাবে সম্ভব?

এবারের T20 বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে টিম ইন্ডিয়া। শুধু তাই নয়, ক্রিকেটের এই মেগা টুর্নামেন্টে এবারে রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য রয়েছে রোহিত বাহিনী। গ্রুপ পর্বের খেলাতে অপরাজিত থাকার পর সুপার এইটের পর্বে উঠেও অপরাজিত থাকল টিম ইন্ডিয়া।


পরপর তিনটি ম্যাচ জিতে গিয়ে তাই সেমিফাইনালের টিকিট কনফার্ম করে ফেলেছেন রোহিত শর্মারা।


গত সোমবার সুপার এইট পর্বের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করে যায় ভারতীয় দল। পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর মাধ্যমে ODI বিশ্বকাপের হারের দুঃখ কিছুটা হলেও কমল টিম ইন্ডিয়ার। এদিকে, সুপার এইটের অন্য দু'টি ম্যাচে আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশকে হারিয়েছিল ভারত। যার পরিপ্রেক্ষিতে, পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেই টিম ইন্ডিয়া পৌঁছে গেল সেমিফাইনালে।


তবে, এবার লড়াই শুরু হবে নকআউটের। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, সেমিফাইনালে ভারতীয় দল মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ডের। আগামী ২৭ জুন ভারতীয় সময় রাত্রি ৮ টা থেকে গায়ানাতে শুরু হবে এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এর আগে ২০২২ সালে T20 বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পর্বে পৌঁছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই হেরে গিয়েছিল ভারত। তবে, এবার অত্যন্ত সতর্ক হয়েই মাঠে নামবে ভারতীয় দল।


সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সেমিফাইনালের ম্যাচ না খেলেও ভারত কিন্তু উঠে যেতে পারে ফাইনালে। হ্যাঁ, প্রথমে বিষয়টি পড়ে কিছুটা অবাক হলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। আর এর পেছনের একমাত্র কারণ হতে পারে গায়ানার আবহাওয়া। এমনিতেই, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, আগামী বৃহস্পতিবার গায়ানাতে ৮৮ শতাংশ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই, ভারী বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে গেল লাভ হবে ভারতেরই।


কিভাবে সেমিফাইনাল না খেলেও ভারত পৌঁছে যাবে ফাইনালে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, এবারের T20 বিশ্বকাপের সূচি অনুযায়ী প্রথম সেমিফাইনালের জন্য রিজার্ভ ডে বরাদ্দ থাকলেও দ্বিতীয় সেমিফাইনালের জন্য কোনো রিজার্ভ ডে নেই। এমন পরিস্থিতিতে, যদি দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ম্যাচ বৃষ্টির কারণে ভেস্তে যায় সেক্ষেত্রে সুপার এইট পর্বের সামগ্রিক ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে ফাইনালিস্ট। আর সেখানেই এগিয়ে রয়েছে ভারত। কারণ, ইংল্যান্ডের থেকে ভারত বেশি ম্যাচ জেতায় সরাসরি পৌঁছে যাবে ফাইনালে। তবে, এমনটা আদৌ ঘটে কিনা তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে বৃষ্টির ওপরেই।

Card image cap

অজিদের হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিতে ভারত

 আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপের ফাইনাল হেরে চোখে জল এসেছিল ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার ।
সেন্ট লুসিয়ায় সেই হারের বদলা নিল টিম ইন্ডিয়া । সৌজন্যে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তিনি একাই অস্ট্রেলিয়াকে এদিন নক আউট করে দিলেন। ভারতের পাহাড়প্রমাণ ২০৫ রান তাড়া করতে নেমে অজিরা থেমে যায় ১৮১ রানে। তবে বিশ্বকাপ অভিযান অজিদের এখনই শেষ হয়ে গেল কিনা তার জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের দিকে নজর থাকবে অস্ট্রেলিয়ারও। আফগানরা জিতলে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ অভিযান শেষ। অন্যদিকে প্রবল শক্তিধর অস্ট্রেলিয়াকে ২৪ রানে মাটি ধরিয়ে ভারত পৌঁছে গেল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। গোটা দেশের প্রার্থনা এই স্বপ্নের দৌড় যেন না থামে।  সুপার এইটের ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে পড়ছিল আহমেদাবাদের সেই অভিশপ্ত ফাইনালের ছায়া। সেদিন হেড ছিলেন নায়ক। এদিন তিনি ট্র্যাজিক নায়ক। একেই হয়তো বলে পোয়েটিক জাস্টিস! আহমেদাবাদের সেই ফাইনালে মারাত্মক হয়ে ওঠা রোহিত শর্মার ক্যাচ ধরেছিলেন ট্রাভিস হেড। তার পরে ভারতের রান তাড়া করতে নেমে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে হেড ম্যাচ নিয়ে চলে গিয়েছিলেন অজিদের সাজঘরে। রোহিতদের সামনে বিশ্বকাপ হাতে তুলেছিলেন প্যাট কামিন্সরা।  হেড ভারতের রান তাড়া করতে নেমে একসময়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু ম্যাচের মোক্ষম সময়ে বুমরাহর বলে হেডকে (৭৬) তালুবন্দি করলেন রোহিতই। ইতিহাসের পাতায় ধার-বাকি থাকে না কিছুই। এদিন খেলার মাঠেই ঋণ চুকিয়ে গেলেন রোহিত।
সুপার এইটে দুদ্দাড়িয়ে শুরু করেছিল টিম ইন্ডিয়া। অন্য দিকে আফগানিস্তানের কাছে হেরে হঠাৎই ব্যাকফুটে চলে যায় অজিরা। চাপ অনুভব করতে শুরু করেন প্যাট কামিন্সরা। ভারতের বিরুদ্ধে তাঁদের জেতা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও রাস্তা খোলা ছিল না। টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান অজি অধিনায়ক মিচেল মার্শ। কিন্তু দিনটা যে ছিল রোহিত শর্মার (৪১ বলে ৯২)। মিচেল মার্শও ভয়ংকর হয়ে ওঠার ঈঙ্গিত দিতে থাকেন। কথায় বলে ক্যাচেস উইন ম্যাচেস। মার্শ ও হেড যখন আহমেদাবাদের সেই অভিশপ্ত রাত ফেরানোর চেষ্টায় মত্ত, ঠিক তখনই কুলদীপের বলে মার্শের দুর্ধর্ষ ক্যাচটি ধরেন অক্ষর প্যাটেল। ওই রকম ক্যাচ ভারতীয় দলের মনোবল বাড়িয়ে দিল কয়েকগুণ। ৮১ রানের পার্টনারশিপ ভাঙলেন কুলদীপ। ম্যাক্সওয়েল যে কোনও দিন, যে কোনও সময়ে ম্যাচের গতিপ্রকৃতি ঘুরিয়ে দিতে পারেন। হেডের সঙ্গে ম্যাড ম্যাক্সও বিপজ্জনক হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। কিন্তু কুলদীপের ম্যাজিক ডেলিভারিতে ম্যাক্সওয়েলের (১৯) উইকেট ভেঙে গেল। মার্কাস স্টোয়নিসও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। কিন্তু ট্রাভিস হেড একাই লড়াই নিয়ে যাচ্ছিলেন ভারতের ক্যাম্পে। বুমরাহ থামিয়ে দিলেন হেডকে। তিনি যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, ততক্ষণই শ্বাস ছিল অস্ট্রেলিয়ার। তিনি ফিরতেই ম্যাচের দখল আরও নিয়ে নেয় ভারত। একে একে অজিদের দেউটি নিভল। ভারত শেষ চারের ছাড়পত্র জোগাড় করে ফেলল।

Card image cap

বাটলারের ব্যাটে তছনছ আমেরিকা

পাকিস্তানকে হারিয়ে চমক দিলেও জস বাটলারদের ইংল্যান্ডের সামনে চলল না জারিজুরি। টি২০ বিশ্বকাপের সুপার এইটের লড়াইয়ে আমেরিকাকে হেলায় হারাল ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে ১১৫ রান করেছিল আমেরিকা। একটিও উইকেট না হারিয়ে ৯ ওভার ৪ বলেই সেই রান তুলে ফেলল ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা। অধিনায়ক জস বাটলার একাই করলেন ৩৮ বলে ৮৩ রান। সংযত ২৫ রানের ইনিংসে তাঁকে সঙ্গ দিলেন ফিলিপ সল্ট। বোলিংয়ে দাপট দেখালেন ক্রিস জর্ডন। মাত্র ২.৫ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নিলেন জর্ডন। এদিন হ্যাটট্রিকও করেন তিনি। সব মিলিয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্সে জোরে সেমিফাইনালে নিজেদের জায়গা পাকা করে ফেলল ইংল্যান্ড।প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বাটলার। প্রথম ওভারেই আন্দ্রিস গৌসের উইকেট হারায় আমেরিকা। যদিও স্টিভেন টেলর ও নীতীশ কুমার জুটি পরিস্থিতি সামাল দেয়। আদিল রশিদেক ঘুর্নির সামনে বারবার অস্বস্তিতে পড়ছিল আমেরিকার ব্যাটাররা। বল করতে এসে চমকে দেন ক্রিস জর্ডনও। মাত্র ২.৫ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি। পর পর কোরি অ্যান্ডারসন, আলি খান এবং সৌরভ নেত্রাভলকরকে আউট করে করেন জর্ডন। আদিল, ক্রিসদের দাপটে শেষ পর্যন্ত ১১৫ রানে অল আউট হয়ে যায় আমেরিকা।বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে পৌঁছনোর তাড়া ছিল বাটলারদের। চলতি বিশ্বকাপে প্রথমবার নিজের সামর্থ অনুযায়ী খেললেন অধিনায়ক জস বাটলার। তাতেই তছনছ হয়ে গেল আমেরিকা। পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে ইংল্যান্ড করে ৬০ রান। পরের ৫৭ রান করতে মাত্র ২২ বল নেয় তারা। ৩৮ বলে ৮৩ রান করে অপরাজিত থাকেন বাটলার। ২১ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকলেন সল্ট। সব মিলিয়ে হেলায় জিতলেন তাঁরা।আমেরিকাকে হারিয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে শীর্ষে উঠে গেল ইংল্যান্ড। তাদের নেট রানরেট ১.৯৯২। গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের খেলায় যে দল জিতবে তারাও শেষ চারে উঠে যাবে। অন্যদিকে সুপার ৮-এ তিন ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল আয়োজক দেশ আমেরিকা।

Card image cap

সেমি কার্যত নিশ্চিত রোহিতদের

বিরাট কোহলি ভিত তৈরি করলেন। ঋষভ পন্থ ফসল ফলালেন। আর হার্দিক পাণ্ডিয়া জানালেন, পিকচার অভি বাকি হ্যায়! আর শনিবাসরীয় সন্ধ্যার শো স্টপার কুলদীপ যাদব। বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কার্যত পাকা করে ফেলল টিম ইন্ডিয়া।
বাংলার বাঘ নাকি মেন ইন ব্লু! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছনোর দৌড়ে কে এগিয়ে যাবে, সেদিকেই নজর ছিল গোটা দুনিয়ার। ফেভারিট হিসেবে অপ্রতিরোধ্য রোহিত শর্মারাই আরও একটি ম্যাচ নিজেদের নামে করে ফেললেন। শাকিব আল হাসানদের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি একটা লড়াইয়ের অপেক্ষায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতকে জিততে খুব একটা কসরত করতে হল না। ব্যাটে-বলে দুরন্ত দাপটের সৌজন্যে আরও একবার কুড়ি-বিশের ফরম্যাটে বিজয় ঝাণ্ডা ওড়াল ভারতই।
এদিন টস জিতে প্রথমে রোহিতদের ব্যাট করতে পাঠান নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তাতে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপকে বিশেষ বাগে আনতে পারেননি বাংলাতদেশি বোলাররা। উলটে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ৩৭ রানের ইনিংস খেলে ভিত গড়ে দেন কোহলি। এরপর শক্ত মাটিতে দুরন্ত ৩৪ রান করে দলকে আরও খানিকটা এগিয়ে দেন পন্থ। আর সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার ইনিংস খেলেন পাণ্ডিয়া। চারটি বাউন্ডারি ও তিন ছক্কা হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুির করে দলকে প্রায় ২০০ রানের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়ে অপরাজিত হিসেবে মাঠ ছাড়েন। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তিনি যে এখনও দলের শক্ত স্তম্ভ, তা আরও একবার বুঝিয়ে দেন ভারতীয় অলরাউন্ডার।
জবাবে ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে টিকতে পারেনি বাংলাদেশ। অধিনায়ক শান্তর ৪০ রান ছাড়া ভারতীয় পেস ও স্পিনের সামনে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েন বাকিরা। একাই তিনটে উইকেট নেন কুলদীপ। অর্শদীপ ও বুমরাহ তুলে নেন দুটি করে উইকেট। 
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভারতের তুলনায় যে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে, তা পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখলেই স্পষ্ট। তবে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর আরও ক্ষিপ্র হয়ে উঠতে পারেন লিটন দাসরা, এমন আশঙ্কাই করা হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয়দের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যে বর্তমানে কার্যত অসম্ভব, সেটাই বুঝিয়ে দিলেন কোহলিরা। এই ম্যাচ হারায় বিশ্বকাপ থেকে একপ্রকার ছিটকেই গেল বাংলাদেশ। উলটোদিকে এবার অজিদের হারিয়ে অপরাজিতভাবেই শেষ চারে রোহিতরা যেতে পারেন কি না, সেটাই দেখার।