CATEGORY politics:

Card image cap

শপথের দিনই উধাও ঘাসফুলের তিন হেভিওয়েট প্রার্থী

সদ হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনই উধাও হয়ে গেল লোকসভা ভোটে জয়ী তৃণমূলের তিন প্রার্থী। মঙ্গলবার নতুন সাংসদ ভবনে বাংলার জয়ী সমস্ত সাংসদরা এইদিন শপথ নিলেও দেখা মিলল না তৃণমূলের তিন জয়ী প্রার্থী। শুধু প্রার্থী বলা ভুল, বলা ভাল হেভিওয়েট প্রার্থী। প্রশ্ন উঠেছে তাঁরা গেলেন কোথায়? এই বিষয়েই দানা বেঁধেছে রহস্য।


সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার শপথ নিলেন তৃণমূলের ২৬ জন জয়ী প্রার্থী। শপথ নেননি তৃণমূলের তিন সাংসদ। সেই তালিকায় রয়েছেন বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের হাজি নুরুল ইসলাম, ঘাটালের দীপক অধিকারী (দেব) এবং আসানসোল লোকসভার শত্রুঘ্ন সিনহা। তাঁরা গেলেন কোথায়? একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে দেব সিনেমার কাজে ব্যস্ত থাকায় মঙ্গলবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি। আগে থেকেই ঠিক ছিল, অভিনেতা-সাংসদ দেব বুধবার শপথ নেবেন। অন্যদিকে ভোটের পরেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বসিরহাটের জয়ী প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। আর নিজের মেয়ের বিয়ের জন্য এইদিন সংসদ ভবনে আসেননি শত্রুঘ্ন সিনহা।


তবে এইদিন তৃতীয় বার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয় পেয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি তৃতীয় বার সাংসদ হিসাবে শপথ নিলেন। কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের জয়ী প্রার্থী মালা রায় এবং কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের জয়ী প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নিলেন। শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নিলেন। শপথবাক্য পাঠের পর মন্ত্রপাঠ করেন তিনি। বধর্মান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী তথা প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ সাংসদ হিসাবে শপথ নিলেন।


তৃণমূল-বিজেপি দুই দলের অধিকাংশ সাংসদই বাংলা ভাষায় শপথবাক্য পাঠ করেন। ব্যতিক্রম ছিলেন কয়েকজন। কীর্তি আজাদ ও ইউসুফ পাঠান হিন্দি ভাষায় শপথ নেন। ইংরেজিতে শপথ বাক্য পাঠ করেন সৌগত রায়, জুন মালিয়া, প্রতিমা মণ্ডলরা। শপথ শেষে আবার তৃণমূলের প্রায় সকলেই জয় বাংলা স্লোগান দেন। সবমিলিয়ে এদিন জমজমাট ছিল বাংলার সাংসদদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান।

Card image cap

কল্যাণের মন্ত্রোচ্চারণ, খেলা হবে-জয় বাংলা স্লোগান অন্যদের

সংসদে শপথ নিলেন বাংলার সাংসদেরা। সদ্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই শপথ নিলেন বাংলা ভাষায়। লোকসভায় উঠল ‘খেলা হবে’ স্লোগান। শপথ গ্রহণের পর তৃণমূল সাংসদদের গলায় শোনা গেল জয় বাংলা, জয় তৃণমূল। এমনকী, কেউ কেউ আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেও স্লোগান দিলেন সংসদে। তবে বাংলার শাসকদলের সাংসদের মধ্যে তিনজন এদিন শপথ নেননি। তাঁরা আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে শপথ নেবেন বলেই খবর।
অধিকাংশ সাংসদই বাংলা ভাষায় শপথবাক্য পাঠ করেন। ব্যতিক্রম ছিলেন কয়েকজন। কীর্তি আজাদ ও ইউসুফ পাঠান হিন্দি ভাষায় শপথ নেন। ইংরেজিতে শপথ বাক্য পাঠ করেন সৌগত রায়, জুন মালিয়া, প্রতিমা মণ্ডলরা। অলচিকিতে পাঠ করেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ কালীপদ সোরেন। শপথ মঞ্চে দাঁড়িয়েই মন্ত্রপাঠ করলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যখন শপথ নিতে যাচ্ছেন সংসদে তখন ‘খেলা হবে’ স্লোগান উঠেছে। শপথ শেষে আবার তৃণমূলের প্রায় সকলেই জয় বাংলা স্লোগান দেন। সবমিলিয়ে এদিন জমজমাট ছিল বাংলার সাংসদদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান।

তৃণমূলের টিকিটে বাংলা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ২৯ জন। বিজেপির সাংসদ সংখ্য়া ১৩। এদিন সংসদে ছিলেন না ঘাটালের সাংসদ দেব, আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা এবং বসিরহাটের সাংসদ নুরুল ইসলাম। আগে থেকেই ঠিক ছিল, অভিনেতা-সাংসদ দেব বুধবার শপথ নেবেন। মেয়ের বিয়ের কাজে ব্যস্ত থাকায় এদিন আসতে পারবেন না বলে আগেই দলকে জানিয়ে দিয়েছিলেন শত্রুঘ্ন। অন্যদিকে বসিরহাটের সাংসদ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Card image cap

কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করল CBI

এক কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে তাঁকে জেলের ঘানি টানতে হচ্ছে। এবার আরও এক কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেপ্তার হতে হল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। ইডির পর কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করল সিবিআই। মঙ্গলবার রাতে তিহাড় জেলেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সোমবারই তিহাড়ে গিয়ে কেজরিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার হিসাবে দেখানো হয়। বুধবারই সিবিআই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে আদালতে পেশ করবে। এর ফলে বিপদ আরও বাড়ল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর। ইডির দায়ের করার মামলায় তিনি কোনওক্রমে জামিন পেলেও সিবিআইয়ের মামলায় হেফাজতে থাকতে হতে পারে তাঁকে। জেল থেকে মুক্তি পেতে হলে দুই এজেন্সির মামলাতেই জামিন পেতে হবে আপ সুপ্রিমোকে।ইডির করা মামলায় কেজরিওয়ালের জামিন নিয়ে গত দুদিন বিভিন্ন আদালতে টানাপোড়েন চলছে। বৃহস্পতিবার নিম্ন আদালত জামিন দিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু মুক্তি আটকাতে তৎপর ইডি পরের দিনই দ্বারস্থ হয়েছিল দিল্লি হাই কোর্টের। ইডির আর্জি ছিল, বাতিল করা হোক নিম্ন আদালতের নির্দেশ। শেষ পর্যন্ত সেই মতোই কেজরির জামিনে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য হয় ২৫ জুন।

Card image cap

মমতার বৈঠকের পরেই পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে সচিব পদে বদল, এবার দায়িত্বে বিনোদ কুমার

সোমবারই রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী সহ সমস্ত পুরসভার মেয়র এবং চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেই রাজ্যের পুর দফতরের সচিব পদে বদল এল। এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিনোদ কুমারকে। বৈঠক চলাকালীনই এই বদল প্রসঙ্গে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বিনোদ কুমারের নিয়োগ প্রসঙ্গে জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। এদিনের বৈঠকের পর বিনোদ কুমারকে দায়িত্ব দেওয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সোমবার নবান্নে একাধিক পুর এলাকায় পরিষেবা প্রদান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন ঝালদা এবং তাহেরপুর পুরসভা বাদ দিয়ে সমস্ত পুরসভা এলাকার প্রতিনিধিরাই উপস্থিত ছিলেন। পুরসভার কাজে কোথাও কোনও খামতি রয়েছে কিনা, তা বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হয়। জমি জবরদখল থেকে শুরু করে জঞ্জাল পরিষ্কার, একাধিক বিষয়ে বিভিন্ন পরিষেবার ভূমিকা তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় এদিন বেআইনিভাবে সরকারি জমি দখল নিয়ে কড়া বার্তা দেন। কোথাও এই ধরনের ঘটনা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করতে হবে এবং এই ধরনের ঘটনায় রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ঠ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করতে শোনা যায় তাঁকে।

একইসঙ্গে হাওড়া পুরসভা নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করতে শোনা যায় মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে। রথীন চক্রবর্তীর জমানাতে হাওড়া পুরসভার প্রভূত অবনতি হয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি সেখানে ভ্যাট ঠিকমতো পরিষ্কার কেন হয় না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

একাধিক পুরসভার কাজ নিয়ে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সেই সময় উলুূবেড়িয়া পুরসভার পানীয় জল সরবরাহ পরিষেবা থেকে শুরু করে জঞ্জাল �

Card image cap

শিক্ষামন্ত্রী শপথ নিতেই আজব চিৎকার বিরোধীদের!

আজ থেকে শুরু হয়েছে অষ্টাদশ লোকসভার অধিবেশন। কিন্তু বিরোধীরা যেভাবে তাদের হাতিয়ার হিসেবে নেট এবং নিটের দুর্নীতিকে সামনে রেখেছে, তাতে এই অধিবেশন শুরুর প্রথম থেকেই যে তারা সোচ্চার হবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল বিজেপি। তবে এত নির্লজ্জ কোনো বিরোধী হতে পারে, এটা হয়ত কল্পনাও করতে পারছেন না রাজনৈতিক সমালোচকরাও।



অধিবেশন শুরুর আগে যখন বিরোধীদের দেশের উন্নতিতে এগিয়ে আসার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তখন তাকে কার্যত নস্যাৎ করে দিয়ে যখন সংসদে ধর্মেন্দ্র প্রধান শপথ বাক্য পাঠ করতে যাচ্ছেন, তখন আজব চিৎকার করে খবরের শিরোনামে উঠে আসার চেষ্টা করল ইন্ডি জোটের নেতারা।

প্রসঙ্গত, আজ সংসদে বিভিন্ন সাংসদরা শপথ গ্রহণ করেন। আর সেই সময় দেশের শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সাংসদ হিসেবে শপথ গ্রহণ করতে যাওয়ার সময় বিরোধীদের পক্ষ থেকে হই হট্টগোল শুরু করে দেওয়া হয়। বিরোধীরা "নিট, নিট" স্লোগান দিতে শুরু করেন। অর্থাৎ নেট এবং নিটের যে দুর্নীতি হয়েছে, তাকে হাতিয়ার করে শিক্ষামন্ত্রীর শপথের সময় গোটা ব্যবস্থাকে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে এই বিরোধী দলকে।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে, বিরোধী দল অবশ্যই তাদের প্রতিবাদ করবে। কোথাও যদি সরকারের ভুল থাকে, তাহলে গণতন্ত্রে বিরোধীদের সুযোগ আছে, সেই বিষয়ে প্রতিবাদ করার। কিন্তু যখন অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম দিন অধিবেশন শুরু হয়েছে, যখন সকল সাংসদরা শপথ গ্রহণ করতেন, তখন এই সময়ে চিৎকার করে বিরোধীদের এই ধরনের প্রতিবাদ আদতে চূড়ান্ত অসভ্যতা। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

Card image cap

এবার সুজিত বসুর কীর্তি ফাঁস করলেন মুখ্যমন্ত্রী


আজ নবান্ন সভাঘরের বৈঠকের শুরু থেকেই তীব্র ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীতথ্য ফাঁস করে বলেন, '‌সল্টলেকের অবস্থা খুবই খারাপ। সল্টলেক আর রাজারহাটের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। যা পারছে টাকা নিয়ে বসিয়ে দিচ্ছে। সুজিত বসু তো এদের মধ্যে অন্যতম।'‌ সোমবার সমস্ত পুরসভার চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায।রাজ্যের পুরসভার পরিষেবা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


এই নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।


অন্যদিকে আজকের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত তথ্য ফাঁস করে দেন। আর তাতেই সবাই বেকায়দায় পড়েন। সব থেকে বেশি চাপে পড়ে গিয়েছেন বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু। সল্টলেক, রাজারহাট মূলত অফিস পাড়া। আর রাস্তার দু'পাশে ফুটপাথ দখল করে গজিয়ে উঠেছে নানা ধরনের খাবারের দোকান। বিশেষ করে সল্টলেক চত্বরে গেলে এই দৃশ্য সকলেই দেখতে পাবেন। এবার এই নিয়েই ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এছাড়া এখনও যেসব সমস্যা আছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, '‌ফুটপাত জবরদখল বেড়েই চলেছে। পুরসভা তো চোখ দিয়ে দেখে না। পুলিশও দেখে না। যারা দেখে না তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে পদ থেকে। বেআইনি পার্কিং থেকে শুরু করে রাস্তা আটকে অটো, টোটো দাঁড়িয়ে থাকছে। টেন্ডার করার ক্ষমতা আর লোকালি হবে না। সব সেন্ট্রালি হবে। একটা করে ত্রিপল টাঙাচ্ছে আর বসে পড়ছে। কত টাকার বিনিময়ে, কারা নিয়েছে টাকা? কেন এখানকার কাউন্সিলররা কাজ করেন না?‌ সল্টলেক আমার বলতে লজ্জা লাগছে।রাজারহাটেও শুরু হয়েছে বেআইনি দখল। সল্টলেকেও ইচ্ছামতো সুজিত বসু লোক বসাচ্ছেন। কেন বাইরের লোক বসবে?‌ ছবি দেখালে নিজেরাই লজ্জা পাবেন। এআরডি অফিসের সামনের রাস্তাও দখল হয়ে গিয়েছে। আমি নিজে চোখে দেখে এসেছি।'‌


এদিকে এই বৈঠকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রশাসনিক অফিসারদের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। এই বৈঠক থেকে জমি দখল থেকে শুরু করে নানা দুষ্কৃতী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, '‌সল্টলেকে তো সুজিত বসু লোক বসাচ্ছে কম্পিটিশন করে। কেন সল্টলেকের কাউন্সিলররা কাজ করেন না। কেন কেন কেন? এরপর কি আমাকে বের হতে হবে রাস্তা ঝাঁট দিতে?‌' এমন রেগে যেতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুব কম দেখা যায়। মুখ্যমন্ত্রী আজকের বৈঠকে বুঝিয়ে দেন তাঁর কাছে সব খবর আছে।

Card image cap

পরিষেবা নিয়ে ‘রণংদেহী’ মুখ্যমন্ত্রী

আমলা থেকে পুলিশ, রেহাই পাননি কেউ। সোমবার নবান্ন সভাঘরের প্রশাসনিক বৈঠকে পুর পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এর পরই একাধিক পদে রদবদল ঘটাল নবান্ন। তিনি বনদপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব বিবেক কুমারকে ভূমি দপ্তর দেখার কথা বলেন। তার পরেই সচিব স্তরে রদবদলের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্মীবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দপ্তর।
বনদপ্তরের দায়িত্ব থেকে ভূমি দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিবেক কুমারকে। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে তাঁর কাছে প্রাণিসম্পদ দপ্তরটিও রইল। বনদপ্তরের দায়িত্বে এলেন অগ্নিনির্বাপণ ও আপৎকালীন পরিষেবা দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব মনোজ কুমার আগরওয়াল। বনদপ্তরটি থাকছে তাঁর অতিরিক্ত দায়িত্বে।এদিন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বিনোদ কুমারকে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব করা হয়েছে। আর এক অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক স্মারকি মহাপাত্রকে জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার দপ্তরের সচিব করা হল। সমবায়ের সঙ্গে এই দপ্তরেরও দায়িত্বে ছিলেন কৃষ্ণ গুপ্তা। তাঁকে শুধু সমবায় দপ্তরটি দেওয়া হয়েছে।

Card image cap

'মানুষকে যারা ভালবাসেনা, তাদের ছুড়ে ফেলতে আমার এক সেকেন্ডও লাগবে না'

পুরসভার কাজে তীব্র অসন্তোষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। স্থানীয় স্তরে যে সব অভিযোগ বিরোধীদের মুখে শোনা যায়, আজ সেগুলোই শোনা গেল খোদ মুখ্যমন্ত্রীর মুখে। কাউন্সিলর, পুরমন্ত্রীকে সামনে বসিয়ে একের পর এক তোপ দাগলেন মমতা। একেবারে রণংদোহী মেজাজে দেখা গেল মমতাকে। জমি দখল, বেআইনি নির্মাণ, টেন্ডারের নামে টাকা খাওয়া, পার্কিং-এর নামে তোলাবাজির মতো অভিযোগ শোনা গেল তাঁর মুখে।


সোমবার রাজ্যের প্রায় সব পুরসভার পুরপিতাদের নিয়ে নবান্নে বৈঠকে বসেন মমতা। উপস্থিত ছিলেন একাধিক মন্ত্রী।


মমতা কী কী বললেন একনজরে


‘পুরসভা রাখার দরকার কী’-বৈঠকের শুরুতেই মমতা বলেন, “আমার কথা কিছুটা তিক্ত হলেও মনে রাখবেন পুরসভা কিন্তু মানুষকে পরিষেবা দেয়। আমি বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি, কোথাও যখন দখলদারি চলছে, তখনও কোনও অ্য়াকশন নেওয়া হচ্ছে না। কেউ টাকা খাওয়াচ্ছে, কেউ টাকা খাচ্ছে। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছে রাজ্যের আইডেন্টিটিটা এটাতে নষ্ট হচ্ছে। মানুষ যদি উন্নয়নের কাজ না পায় তাহলে সেই পুরসভা বা পঞ্চায়েত রাখার দরকার কী!”


‘বাংলার আইডেন্টিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আপনাদের টাকা নেওয়ার জন্য’– বেআইনি নির্মাণের জেরে হাওড়ায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকার জায়গা হয় না। এমনটাই বললেন মমতা। তিনি বলেন, “হাওড়ায় প্রচুর বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। রথীন যখন চেয়ারম্যান ছিল, হাওড়াটাকে ১২টা বাজিয়ে দিয়ে গিয়েছে। অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার জায়গা নেই। নো অ্যাকশন। কারণ প্ল্যান পাশ করার জন্য মানুষকে অনেক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অনলাইনে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল। তাতেও কাজ হয়নি। আমি চাইনা কাউকে হেনস্থা হতে হোক। কিন্তু একটা গ্রুপ তৈরি হয়েছে। খালি জায়গা দেখলেই লোক বসিয়ে দিচ্ছে। বাংলার আইডেন্টিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আপনাদের টাকা নেওয়ার জন্য, কেন বুঝতে পারছেন না? জমি পাচ্ছেন বেচে দিচ্ছেন। খুব খারাপ পারফরম্যান্স, কেন তৈরি করা হয়েছিল আমি জানি না।”

‘কে খাচ্ছেন না জানি না, নিশ্চয় দিয়েই খাচ্ছেন’- টেন্ডার নিয়েও চলছে দুর্নীতি! খোদ মমতার মুখেই এমন অভিযোগ। বললেন, “বালির এসডিও অমৃতা কী করছেন, কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। নিজেরা টেন্ডার দিচ্ছেন, কার থেকে কতটা খাচ্ছেন জানি না। কে খাচ্ছেন, কে খাচ্ছেন না জানি না। নিশ্চয় দিয়েই খাচ্ছেন। আমি এই কথাগুলো বলার জন্য মোটেই খুশি নেই, আমি দুঃখিত।”

‘একটা ঢাকনা করলেও খুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন’ – পুরসভাগুলির পরিষেবা নিয়ে প্রবল ক্ষোভ মমতার। তিনি উল্লেখ করেন, কোথাও কোথায়ও আলো জ্বলতেই থাকে, কোথাও জল বন্ধ করা হয় না। রাস্তা সারানো হয় না। তিনি বলেন, ‘একটা ঢাকনা করলেও কেউ খুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন।’

‘আমার বাড়ি থেকে শুরু করুন’– বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সরব মমতা। বলেন, “হাতিবাগান, গড়িয়াহাটের অবস্থা খারাপ। ওয়েবেলের কাছে দেখলাম কত দোকান বসেছে, সবাই আউটসাইডার। নোংরা করে রেখে দিয়েছে। কেন নতুন একটা জোন করা হচ্ছে না? বেআইনিভাবে চারতলা-পাঁচ তলা তোলা হচ্ছে, কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না। দুএকজনকে গ্রেফতার করুন, দু-একটা নির্মাণ ভাঙুন। আমার বাড়ি থেকে শুরু করুন। কেন বেআইনি কোনও জিনিস আমরা মানব।”

‘আইসি হলে ইনকাম করে নেবেন, এসব আর করবেন না’– প্রশাসনিক কর্তাদের কড়া বার্তা মমতার। মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ‘কারও কারও অভ্যাস হয়ে গিয়েছে, আইসি হলে যতটা পারি ইনকাম করে নিই, এসডিও হলে একটা সঞ্চয় করে নিই, ডিএ হলে সঞ্চয় করে নেব- এগুলো অনেক হয়েছে, আর করবেন না প্লিজ, এবার বড্ড চোখে লাগছে।’

‘সুজিত বসু লোক বসাচ্ছেন কম্পিটিশন করে-হোয়াই হোয়াই…’- সল্টলেক-রাজার হাট চত্বর নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ মমতার। নাম নিলেন মন্ত্রী সুজিত বসুর। বললেন, “সল্টলেক দেখে আমার লজ্জা লাগছে। বেআইনি দখল বাড়ছে। ইচ্ছামতো সুজিত বসু লোক বসাচ্ছেন কম্পিটিশন করে। কেন বাইরের লোক বসাবেন। ছবি দেখালে নিজেরা লজ্জা পাবেন। সবাই ত্রিপল লাগিয়ে বসে পড়ছেন, কেন কেন কেন… আমি জানতে চাই। কত টাকার বিনিময়ে এসব হচ্ছে, কারা নিয়েছে টাকা। সল্টলেকের কাউন্সিলররা কেন কাজ করে না? রাস্তা ঝাঁট দেয় না। এবার কি আমাকে রাস্তা ঝাঁট দিতে হবে?”

টেন্ডার নিয়ে কড়া মমতা- মমতা স্পষ্ট বলেন, ‘আজ থেকে লোকালি কোনও টেন্ডার করতে দেব না, সব কেন্দ্রীয়ভাবে হবে। এর জন্য আমি কমিটি তৈরি করে দিচ্ছে। কমিটিতে থাকবেন- মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, অর্থ সচিব, সেচ দফতরের সচিব, সিপি, ডিজি, এডিজি আইন-শৃঙ্খলা।’

উন্নয়ন পর্ষদগুলিতে কী কাজ হয় প্রশ্ন মমতার। “আর্বান ডিপার্টমেন্টের সেক্রেটারি… কী কাজ তাঁর! কতকগুলো বোর্ড রেখে দিয়েছে। দফতরটা রাখার দরকার কী। ৪০০-৫০০ লোক রেখেছে। দিঘা উন্নয়ন অথরিটির আর কোনও প্রয়োজন আছে কি? বিরাট বাড়িতে ৪০০-৫০০ লোক, কারও গা টিপছে, কারও পা টিপছে। আরাম করছে। তাঁদের যেখানে সরকারি কর্মী নেই, সেখানে কাজে লাগিয়ে দাও। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদও তাই। পুরসভা আছে তো কাজ করার জন্য।”

অফিসারদের স্বচ্ছতা নিয়ে কড়া নজরদারি– মমতা বলেন, “অফিসাররা ভাবছে, আমি ২ বছর থাকব কোনও রকমে কাটিয়ে দেব। তা হয় না। আপনার পিরিয়ডটা রিভিউ করা হবে। এবার থেকে রিভিউ কমিটি তৈরি করা হবে। স্বচ্ছতা রেখেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।”

‘কাঁচা রাস্তা-নিকাশির হাল খারাপ’- কলকাতা পুরনিগমকে বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, “অ্যাডেড এরিয়ায় কোনও প্ল্যানিং নেই। পুরসভার মধ্যে তাই কাঁচা রাস্তা রয়ে গিয়েছে। তর্ক করার আগে ভাল করে দেখে নিন। নিকাশি নালা পরিষ্কারের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে কোটি কোটি টাকা দেওয়া হলেও কোনও কাজ হচ্ছে না।”

পার্কিং থেকে তোলাবাজির অভিযোগ খোদ মমতার- মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘শালিমার স্টেশনে মারামারি হয় সম্প্রতি। পার্কিং-এর নামে অনেক জায়গায় অবৈধভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে তোলাবাজি করে। সরকার কেন এর বদনাম নেবে? এর থেকে কি সরকার কোনও টাকা পায়? নাকি দল পায়? যে ব্যক্তি পায়, তার পকেটে যায়। আমি কাউকে পুষতে আসিনি। এরকম হলে পুলিশ অ্যাকশন নেবে।’

‘নেতার কথা না শুনে কাজ করবেন’- ‘পুলিশ দুর্বল হলে অনেকে সুবিধা পেয়ে যায়। কোন পার্টির কোন এমএলএ, কী বলছে শুনবে না। নিজের কাজ দায়িত্বের সঙ্গে করবে। স্পষ্ট বলে দিচ্ছি।’

আর্বান ডিপার্টমেন্ট নিয়ে কড়া মমতা– মমতা বলেন, “আমি কোনও অবহেলা শুনব না। আমি অনেক ভদ্রতা দেখিয়েছি। কিন্তু ভদ্রতা দেখানো মানে এই নয়, কেউ কাজ করবে না, গায়ের জোরে জমি দখল হবে। ৫১,৫০০ কোটি টাকা দিয়েছি। যা চাওয়া হয়েছে তাই দিয়েছি। অথচ দায় হবে সরকারের, মানুষ পরিষেবা পাবে না, এটা আমি মেনে নিতে পাচ্ছি না। “

মমতা বলেন, ‘ভাগাভাগি ছাড়া লোভ করবেন না। যারা লোভ করবেন, তাদের মুখে ললিপপ দিয়ে অথবা লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে বন্ধ করে দিন। কত লাগবে জীবনে বাঁচতে গেলে। কত চাই। আপনারা করছে জমি বিক্রি, ওরা (কেন্দ্রীয় সরকার) বাংলাকে বিক্রি করছে।’

পুকুর ভরাট হলে সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে দিতে হবে। সে যত বড় নেতারই হোক আর যে পুলিশই এর মধ্যে জড়িত থাকুক। বেআইনি নির্মাণ উঠছে। বাড়ি ভেঙে পড়লে দোষ হচ্ছে আমাদের। একটা অ্যাকশন থাকা দরকার: মমতা।

‘আমি টাকা তোলার মাস্টার চাই না’– মমতা বলেন, “গরুর টাকা, কয়লার টাকা সবথেকে বেশি খায় বিজেপি। বালি পাথরের টাকাও খায়। টাকা যায় পুলিশের মাধ্যমে। ওভারলোডিং ট্রাক থেকে মোটা টাকা যায় পুলিশের মাধ্যমে। আমাদেরও কিছু লোক আছে। ইডি-সিবিআই কে ভয় পায়। সব টাকা তোলার মাস্টার হয়ে গিয়েছে। আমি টাকা তোলার মাস্টার চাই না। জনসেবক চাই। যারা পারবেন, তারা টিকিট পাবেন, না পারলে বের করে দেব। কারও কথা শুনব না, সে যত বড় নেতা-নেত্রী হোক।”

মমতা বলেন, “বিকেল সাড়ে ৫টার জন্য যদি আলো জ্বলে, সেই দফতরকে টাকাই দেব না। ৭ কোটি লোককে ৭৫ ইউনিট বিদ্যুৎ দিই। এতে অনেক খরচ হয়। অনেকেই জানেন না।”

অরূপ বিশ্বাসকে মমতা বলেন, ‘শর্ট সার্কিট হচ্ছে বেশি। কারণ কেউ দেখে না। অবহেলা। অরূপ সিনসিয়ারলি দেখতে হবে। পুরসভাকে দেবে না। তোমরা দেখবে। পুরসভা, যারা ময়লা তোলে না, তারা বিদ্য়ুৎ দেখবে! তারা তো টাকা খেতে ব্যস্ত।’

মমতা বলেন, “আমার যা বলার বলেছি। আমি এর জন্য কোনও ব্যাখ্যা কারও কাছে চাইব না। আমি যা বললাম সেটা মানুষের কথা। আমাকে কেউ ভয় দেখাবেন না। আমি মানুষকে ভালবাসি। যারা মানুষকে ভালবাসে না, তাদের ছুড়ে ফেলতে এক মিনিটও সময় লাগবে না। বাংলার আইডেন্টিটি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। বিধায়কদের বলব এই সব কাজে নাক না গলাতে। আমার কাছে সব রিপোর্ট আছে।”

সব শেষে মমতা বলেন, ‘মানুষের কাছ থেকে যে অভিযোগ শুনেছি, সেগুলো নিয়ে সার্ভে করে যা জেনেছি সেটাই বললাম। এটা বকাবকি হিসেবে নেবেন না।’

Card image cap

ছেড়ে আসা ওয়ানড়বাসীকে আবেগপ্রবণ চিঠি রাহুলের

এক জায়গা পাঁচ বছরের চেনা, আরেকটা নতুন। পাকেচক্রে এখন নতুনের জন্য পুরনোকে বিদায় জানাতে হয়েছে। রাজনীতির এমনই জটিল ‘নীতি’! কিন্তু বিদায় দেওয়া মানেই তো ভুলে যাওয়া নয়, উপেক্ষাও নয়। পিছুটান নিয়েই ওয়ানড়বাসীর উদ্দেশে আবেগপ্রবণ চিঠি লিখলেন সাংসদ রাহুল গান্ধী । সোমবার সাংসদ হিসেবে শপথগ্রহণ। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে ওয়ানড় ও রায়বরেলি – দুই আসন থেকেই জিতেছেন সোনিয়াপুত্র। একটি আসন ছাড়তে হতো তাঁকে। গান্ধীদের গড় রায়বরেলি রাখতে ওয়ানড় ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাহুল। আর তাই শেষবেলায় দক্ষিণ ভারতের এই যুদ্ধক্ষেত্রে এতদিনের সমর্থকদের কৃতজ্ঞ জানালেন তিনি।
রবিবার নিজের সোশাল মিডিয়া  পোস্টে রাহুল ওয়ানড়বাসীর উদ্দেশে লেখা তাঁর চিঠি পোস্ট করেছেন। দু পাতার সেই চিঠি ছত্রে ছত্রে তাঁর আবেগের প্রকাশ। লিখেছেন, ‘‘ওয়ানড় ছেড়ে আসতে হওয়ায় আমি দুঃখিত। কিন্তু আমার সান্ত্বনা হল, আমার বোন প্রিয়াঙ্কা ওখানে আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করবে। সুযোগ পেলে প্রিয়াঙ্কা ভালো কাজ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।”
চিঠিতে রাহুল উল্লেখ করেছেন, তাঁর জীবনের কঠিন সময়, যখন তাঁকে পদে পদে অপমান করা হচ্ছিল, ছোট করা হচ্ছিল, বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছিল, তখন নিঃশর্ত ভালোবাসা দিয়ে নিজেদের জনপ্রতিনিধিকে আগলে রেখেছেন ওয়ানড়বাসী। সংসদে তাঁদের ‘কণ্ঠ’ হয়ে ওঠার জন্য তিনি গর্বিত। এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এ প্রসঙ্গে তিনি কেরলের ভয়াবহ বন্যার কথাও উল্লেখ করেছেন। সেই দুঃসময়েও নিজেদের জনপ্রতিনিধির উপর তাঁরা ভরসা রেখেছিলেন। ওয়ানড়বাসীকে তিনি পরিবার বলে মনে করেছেন, এখনও তাই মনে করবেন।

Card image cap

আরএসএস মুখপত্রে বঙ্গ বিজেপির সমালোচনা

চব্বিশের লোকসভা ভোটে বিজেপির ব‌্যর্থতা নিয়ে আগেই হতাশা প্রকাশ করেছিল আরএসএস। বিজেপির ভরাডুবির বাখ‌্যায় এবার আরএসএসের মুখপত্রে স্বীকার করে নেওয়া হল, বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ‌্য কোনও মুখ বিজেপির নেই।
আরএসএসের মুখপত্র ‘স্বস্তিকা’ পত্রিকায় একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চার বছর পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও গ্রহণযোগ‌্য, জোরদার মুখ না থাকায় আশানুরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি নেতৃত্ব। ২০১৯—এর পর তিনটি নির্বাচনের দুটিতে ল‌্যাজেগোবরে হতে হয়েছে বিজেপিকে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, ২০২৬—এর ভোট এই রাজ্যে বিজেপির শেষ অগ্নিপরীক্ষা। চব্বিশের লোকসভা ভোটে বঙ্গ বিজেপির হতাশাজনক ফলাফল হয়েছে। উনিশের লোকসভায় পাওয়া ১৮টি আসন থেকে ৬টি আসন কমে গিয়েছে। মোদি-অমিত শাহরা রাজ্যে প্রচারে এসে ৩০ আসন পাওয়ার টার্গেট দিয়েছিলেন দলের বঙ্গ নেতাদের। কিন্তু বিজেপির যে উচ্চ আশার ফানুস তৈরি হয়েছিল তা চুপসে গিয়েছে ফল প্রকাশের পরই।
হতাশাজনক ফলাফলের পর ঘরে-বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির। পাশাপাশি সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। কারণ সিংহভাগ আসনেই নিজের পছন্দের প্রার্থী করেছিলেন শুভেন্দু। মেদিনীপুর আসন থেকে সরিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে দিলীপ ঘোষকে পাঠিয়েছিলেন তিনিই। নতুন আসনে হারতে হয়েছে দিলীপকে। যা নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা সংঘের ঘরের ছেলে দিলীপ।
আরএসএসের মুখপত্র স্বস্তিকায় ১৭ জুনের সংখ‌্যায় দিলীপের সেই আসন বদলে দেওয়া ও পছন্দের প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২০২১—এর বিধানসভা ভোটের পর হারিয়ে যাওয়া নেতা থেকে শুরু করে, অচেনা-অজানা আর চমক দেওয়া প্রার্থী চয়নের ফলে বিজেপিকে বড়রকমের খেসারত দিতে হয়েছে।’ এতে স্পষ্ট, প্রার্থী নির্বাচনের বিষয়টিও পরাজয়ের অন‌্যতম কারণ বলে মনে করছে আরএসএস। কারও নাম না উল্লেখ থাকলেও এই লেখার মধ্যে নিশানায় যে শুভেন্দু তা মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পাশাপাশি রাজ‌্য বিজেপির মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দলের বিষয়টি নিয়েও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে সংঘের মুখপত্রের নিবন্ধে। বলা হয়েছে, “মূলত সাংগঠনিক দুর্বলতায় বিজেপি ৬ আসন, আনুমানিক ১.৫ শতাংশ ভোট হারিয়েছে। সঙ্গে জুড়েছে নেতাদের ক্লৈব‌্য আর দৃষ্টিকটু অন্তর্দলাদলির কারণ। ভোটের পরেও যার রেশ চলছে।”

Card image cap

আদালতে বহরমপুরের তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ

পুরসভার জমি দখলের অভিযোগের ঘটনায় গুজরাত হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। বৃহস্পতিবার তাঁর হয়ে আদালতে সওয়াল করেছেন তাঁর আইনজীবী। পাঠানকে তাদের জমি দখলের অভিযোগে নোটিস পাঠিয়েছিল গুজরাতের বরোদা পুরসভা। সেই নোটিসের বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে গিয়েছেন পাঠান।


বরোদা পুরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান শীতল মিস্ত্রি জানিয়েছেন, বিষয়টি যে হেতু আদালতে বিচারাধীন, তাই দেখা হচ্ছে আদালত কী সিদ্ধান্ত নেয়।


গত ১৩ জুন জমি দখল সংক্রান্ত অভিযোগ তুলেছিলেন বরোদার প্রাক্তন বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় পাওয়ার। তাঁর অভিযোগ, বরোদায় নিজের বাংলোর পাশে পুরসভার জমি দখল করে রেখেছেন ইউসুফ। বরোদার তান্দলাজা এলাকায় বাংলো রয়েছে ইউসুফের। সেই বাংলোর পাশে রয়েছে পুরসভার ‘টাউন প্ল্যানিং ২২ ফাইনাল প্লট ৯০’ সংরক্ষিত জমিটি। ২০১২ সালে এই জমিটি পুরসভার থেকে কিনে নিতে চেয়েছিলেন পাঠান। সেখানে নিজের আস্তাবল গড়তে চেয়েছিলেন তিনি। পুরসভা একটি প্রস্তাব পাশ করে সেই জমি প্রাক্তন ক্রিকেটারকে দেওয়ার অনুমোদন দেয়। ২০১৪ সালে বিষয়টি যায় গুজরাত সরকারের কাছে। তখন রাজ্য প্রশাসন সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। এখন অভিযোগ, সেই জমির চারপাশে প্রাচীর তুলে তা দখল করে রেখেছেন ইউসুফ। সেই জমি ফেরানোর আর্জি জানিয়েই বরোদা পুরসভার বর্তমান স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং পুরকমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন বিজয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এই নিয়ে পাঠানকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। শীঘ্র সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে। পুরসভার ওই জমি উদ্ধারের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।


এর পর ১৫ জুন বরোদার আর এক কাউন্সিলর নিতিন ডোঙ্গা পুরকমিশনারকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, পাঠানের বিরুদ্ধে জমি দখলের মামলা দায়ের করা হোক। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, লোকসভা ভোটে প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিলের সময় পাঠান পুরসভার এই জমির একাংশের মালিকানা নিজের নামে দেখিয়েছেন। বরোদা পুর কমিশনার জানিয়েছেন, এই নিয়ে পাঠানকে ইতিমধ্যে নোটিস পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।


এ বারের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল তৃণমূল। গুজরাত থেকে তাঁকে বাংলায় নিয়ে এসে বহরমপুরে ভোটের টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর ‘গড়’ বলে পরিচিত বহরমপুরে তিনি ছিলেন দলের তুরুপের তাস। ৫২ হাজারের বেশি ভোটে তিনি অধীরকে হারিয়ে দিয়েছেন। এই জয়ের জন্য দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরোয়া বৈঠকে তাঁকে ‘জায়েন্ট কিলার’ আখ্যাও দেন। সেই ফলপ্রকাশের পরেই গুজরাতের পুরসভা থেকে নোটিস পাঠানো হয় পাঠানের কাছে। এ বার তিনি দ্বারস্থ হয়েছেন হাই কোর্টের।

Card image cap

NEET কেলেঙ্কারিতে সরাসরি মোদিকে দায়ী করলেন রাহুল

মেডিক্যালের অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় ওঠে দুর্নীতির অভিযোগকে ‘জাতীয় সংকট’ বলে দাবি করলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। রাহুলের অভিযোগ, কেন্দ্র পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এতদিন কাজের সুযোগ সংকুচিত হচ্ছিল। এবার পড়াশোনর সুযোগও ছিনিয়ে নিচ্ছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। নিট কেলেঙ্কারির জন্য সরাসরি মোদিকে দায়ী করে রাহুলের কটাক্ষ, “বলা হত মোদি নাকি ইজরায়েল-গাজার যুদ্ধ, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ আটকে দিয়েছেন। অথচ দেশে যে পেপার লিক হচ্ছে তা আটকাচ্ছে না! বা চাইছে না।”
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি বহুদিন আগে থেকেই বলে আসছেন, বিজেপি দেশের সব স্বশাসিত সংস্থা দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সব সংস্থায় ঢোকানো হচ্ছে আরএসএসের লোক। নিট কেলেঙ্কারির জন্য সেই মধ্যমেধার আরএসএস পন্থীদেরই দায়ী করলেন রাহুল। রায়বরেলির সাংসদ এদিন বললেন, “সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বিজেপি-আরএসএসের লোক। মেধা, যোগ্যতার বাইরে শুধু নিজেদের বিচারধারা মেনে চলা লোককে ভিসি করে বসালে এই হয়। মধ্যমেধার লোককে দায়িত্বে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি নিটকে শুধু পড়ুয়াদের সমস্যা হিসাবে না দেখে গোটা দেশের সমস্যা হিসাবে দেখছেন। তাঁর বক্তব্য, “এই মুহূর্তে দেশের পড়ুয়াদের উপর ভীষণ চাপ। অন্যতম কারণ হল দেশের বেকারত্ব। দেশের যুবসমাজের কাছে কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। এটা শুধু শিক্ষায় ক্রাইসিস নয়, এটা জাতীয় সমস্যা।” কংগ্রেস নেতা সরাসরি বলছেন, পেপার লিকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত। কিন্তু সেটারও আগে ঠিক করতে হবে সিস্টেম। আরএসএসের লোকজনকে না সরালে সেটা সম্ভব নয়।”

Card image cap

কেন তৃণমূল ছাড়লেন তাপস রায়? বোমা ফাটালেন সৌগত!

এবার দলের কর্মসূচিতে গিয়ে সরাসরি তাপস রায়কে কটাক্ষ করে বসলেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তাপস রায় কেন দল ছাড়লো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি। পাশাপাশি উত্তর কলকাতার পরাজিত বিজেপি প্রার্থীকে কটাক্ষ করতে গিয়ে "দলের ঊর্ধ্বে মনে করত" এরকম মন্তব্য করতেও দেখা গেল সৌগতবাবুকে।


প্রসঙ্গত, এদিন একটি কর্মসূচিতে উপস্থিত হন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। আর সেখানেই তাপস রায়কে কটাক্ষ করেন তিনি। সৌগতবাবু বলেন, "তাপস কেন দল ছাড়লো? দিব্যি থাকছিল। অনেকের বাড়িতেই তো রেড হয়েছে। শুধু তো ওর একার বাড়িতে হয়নি। কারণ ও নিজেকে পার্টির ঊর্ধ্বে মনে করত।"


অর্থাৎ তাপস রায় লোকসভা নির্বাচনের সময় দলবদল করলেও, এতদিন পর তাকে আক্রমণের মুখে ফেললেন সৌগত রায়। তবে সৌগতবাবুর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কি প্রতিক্রিয়া দেন তাপস রায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

Card image cap

তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরতে চান প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে

বঙ্গে কংগ্রেসের মরা বাজারেও পুরনো দলে প্রত্যাবর্তন করতে চান প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। জঙ্গিপুরের প্রাক্তন সাংসদ দিল্লিতে দলের হাই কম্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। শীর্ষ নেতৃত্ব ছাড়পত্র দিলেই ফের কংগ্রেসের হাত ধরবেন অভিজিৎ।
অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় একটা সময় কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন। প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হয়ে যাওয়ার পর তাঁর ছেড়ে যাওয়া কেন্দ্র জঙ্গিপুর থেকে উপনির্বাচনে জিতে সাংসদ হন তিনি। ২০১৪ সালে ফের জঙ্গিপুর থেকে সাংসদ হন। কিন্তু ২০১৯ সালে জঙ্গিপুরে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হন অভিজিৎ। তার পর থেকেই কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। ২০২১ সালের জুলাই মাসে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দেন তৃণমূলে । কিন্তু রাজ্যের শাসকদলও সেভাবে ব্যবহার করেনি তাঁকে। অভিজিৎকে লোকসভা বা বিধানসভা কোনও নির্বাচনেই প্রার্থী করা হয়নি।
বস্তুত গত ৩ বছর তৃণমূলেও সেভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি অভিজিৎবাবুকে। এবার জঙ্গিপুরের প্রাক্তন সাংসদ ফিরতে চান পুরনো দলে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিজিতের দাবি, গত কয়েক বছরে তৃণমূলে সেভাবে সক্রিয় ছিলেন না তিনি। তাঁর অনুগামীরা এখন তৃণমূল থাকলেও কংগ্রেসে ফিরতে চাইছেন। তাছাড়া গত কয়েক বছরে লাগাতার যেভাবে একের পর এক দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে, তাতে তৃণমূল থাকা আর সম্ভব নয়।

Card image cap

মহিলারা তৃণমূলকে ভোট দেয়নি! বিস্ফোরক সৌগত

তৃণমূলকে ঢেলে ভোট দিয়েছেন গ্রামের মহিলারা। কিন্তু শহুরে মহিলাদের ভোট মেলেনি। বরানগরের এক সভায় এমনই দাবি করলেন দমদমের সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর এহেন দাবি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
রাজ্যের সমস্ত মহিলাকে মাসিক ৫০০ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনজাতির মহিলারা পেতেন ১ হাজার টাকা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ম্যাজিক দেখিয়েছিল ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’! লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য বাজেটে মহিলাদের মাসিক ভাতা বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়। জনজাতিদের জন্য করা হয় ১২০০ টাকা। রাজনৈতিক মহলের মতে, এতেই লোকসভা নির্বাচনের বৈতরণী পার করে তৃণমূল। মহিলা ভোটের বিপুল অংশ ভোটবাক্সে পিছনে ফেলেছিল বিরোধীদের। এ দিন সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে দমদমের সাংসদ বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পিছনে ছিল মহিলাদের অবদান। মহিলারাই আসল রক্ষাকর্ত্রী।”
এর পরই সৌগত রায়ের সংযোজন,”বসতি থেকে শুরু করে গ্রামের যে সমস্ত মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেয়েছেন। তারা আমাদের ঢেলে ভোট দিয়েছেন। শহরে যে সমস্ত মহিলারা বড় আবাসনে থাকেন তারা আমাদের ভোট দেয়নি।” তাঁর এহেন মন্তব্য ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে। দমদমের সাংসদ আরও জানান, তিনি আর নির্বাচনে দাঁড়াবেন না।অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তৃণমূলত্যাগী তাপস রায়কে কটাক্ষ করেন সৌগত। বলেন, “বরানগরে তাপস ছিল ধমক দেওয়ার এমএলএ। যে কোনও মিটিংয়ে নেতাকর্মীদের তাপস ধমক দিত। রাজনীতিতে ভুল করলে কী হয় তাঁর দৃষ্টান্ত তাপস।”

Card image cap

মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের পর 'আসল কারণ' ফাঁস করলেন অনন্ত মহারাজ

 মঙ্গলবার সকালে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল! রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি সাংসদ অনন্ত মহারাজের  বাড়িতে যাচ্ছেন শুনেই শুরু হয়ে যায় চর্চা। তাহলে কি নয়া কোনও সমীকরণ? দেখা দেয় এই প্রশ্নও। এবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর নিজেই মুখ খুললেন গ্রেটার কোচবিহারের নেতা।


এদিন মুখ্যমন্ত্রী অনন্তের বাড়ি যাওয়ার পর থেকেই তাঁর তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা মাথাচাড়া দিতে শুরু করে। এই নিয়ে এক সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হলে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্পষ্ট বলেন, 'আমার কি মতিভ্রম হয়েছে! আমি কেন তৃণমূলে যাব? আগ্রহী নই। আমি কোনও দলে নেই'। তাহলে কেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ? উত্তরে অনন্ত বলেন, 'সৌজন্য সাক্ষাৎ। রাজনীতির কোনও কথা হয়নি'।


আজ দুপুরে অনন্তের বাড়ি যান মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি সাংসদ জানান, তাঁকে একটি শাল উপহার দিয়েছেন মমতা। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি পান, সুপারি এবং উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানান। ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে দু'জনের বৈঠক হয়। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বেশ কিছু বিষয়ে কথা বলেন অনন্ত।


তৃণমূলে যোগ দেওয়া থেকে শুরু করে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে নিশীথ প্রামাণিকের পরাজয়, বেশ কিছু বিষয়ে কথা বলতে দেখা যায় বিজে সাংসদকে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়নি বলেও সরব হন অনন্ত। সরাসরি জেলা সভাপতির নাম নিয়ে তোপ দাগেন তিনি।


অনন্ত বলেন, তাঁকে কখনও লোক নিয়ে যেতে বারণ করা হয়েছিল, কখনও আবার বলা হয়, 'মহারাজ আপনাদের লোকেরা যাবে, তবে ঝান্ডা নিয়ে যাবেন না'। বিজেপি সাংসদ সুর চড়িয়ে বলেন, বিজেপির জেলা সভাপতি এসে আমায় বলে, রাজবংশী ভোটার দরকার নেই। ভাটিয়া ভোটে জিতবে। সারা ভারতে কি ভাটিয়া আছে নাকি যে বিজেপিকে জিতিয়ে দেবে?'


গ্রেটার কোচবিহারের নেতা বলেন, এমন কথাবার্তা বলেছিল প্রার্থী। তা সত্ত্বেও তাঁরা নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে দলকে জেতানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ অবধি জয় অধরা থেকে যায়। অনন্ত বলেন, 'যখন বিজেপিকে সমর্থন করেছি, এনডিএ র সঙ্গে যুক্ত হয়েছি, তখন আমি বলেছিলাম, আপনারা যাকে দেবেন আমরা তাঁকে জিতিয়ে দেব। আমরা প্রার্থী দেখব না। সেই কথায় আমরা অনড় রয়েছি'। বিজেপির দিল্লিতে যে সরকার রয়েছে তার সঙ্গে আমরা রয়েছি, স্পষ্ট বলেন অনন্ত মহারাজ।

Card image cap

ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি প্রার্থীকে 'সাময়িক বরখাস্ত'-এর সিদ্ধান্ত

তাঁকে ডায়মন্ড হারবার থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু, লোকসভা ভোটের ফলাফল বলছে, ডায়মন্ড হারবারে কার্যত ভরাডুবি হয়েছিল অভিজিৎ দাস (ববি)-র। এবার সেই ববিকেই 'সাময়িকভাবে বরখাস্ত' করল বিজেপি।

মঙ্গলবার বিজেপির 'তথ্য সন্ধানীদল' ডায়মন্ড হারবারে যায়। সেখানে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাদের। ঘটনায় কার্যত অস্বস্তিতে পড়ে গেরুয়া শিবির। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের পীরতলা এলাকায় 'তথ্য সন্ধানীদল'-এর আহ্বায়ক তথা ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখায় দলের একাংশ। যদিও বিপ্লব দেব গাড়ি থেকে নামেননি বলে দাবি। বিক্ষোভকারীরা ‘ববি ঘনিষ্ঠ’ বলে দাবি ওঠে। ঘটনায় বিজেপির ‘গোষ্ঠীকোন্দল’-এর অভিযোগ উঠেছিল। ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি অভিজিৎ সর্দার অবশ্য গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। এই গোটা ঘটনায় ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে।

এরপরেই ববির বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ডায়মন্ড হারবারের ববির বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপের কারণ হিসেবে বিজেপির তরফে উল্লেখ করা হয়েছে কারণ। যেখানে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবারের একটি 'গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক'-এ উপস্থিত হননি তিনি। এছাড়াও তথাকথিত 'ভোট পরবর্তী হামলা'-য় ‘আক্রান্ত’-দের বৈঠকে যেতে না দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে ববির বিরুদ্ধে।


কর্মীদের দ্বারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ঘেরাও, অনৈতিক মন্তব্য, বিজেপির ডায়মন্ড হারবার জেলা কার্যালয় দফতরের মধ্যে ঘটিত বিশৃঙ্খলার মতো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য দলীয় কর্মীদের ইন্ধনের অভিযোগ তোলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

নিজের বক্তব্য জানানোর জন্য তাঁকে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে চিঠি দিয়ে নিজে বক্তব্য দলের সামনে জানাতে হবে তাঁকে। পাশাপাশি পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই বিষয়ে এই সময় ডিজিটাল-এর তরফে ফোনে একাধিকবার অভিজিৎ দাস (ববি)-র সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, তা সফল হয়নি।

জেলা রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যায়, জেলা সভাপতি এবং ববির মধ্যেকার সম্পর্ক সমীকরণ প্রসঙ্গে। এদিকে অভিজিতের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে ডায়মন্ড হারাবর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভপতি অভিজিৎ সর্দার বলেন, 'দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই অনুযায়ী সবাইকে চলতে হবে। কেউ দলের উর্ধ্বে নয়।'

উল্লেখ্য, রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে সবথেকে শেষে ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী দিয়েছিল বিজেপি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিজেপি কর্মী অভিজিৎ দাসকে প্রার্থী করে গেরুয়া শিবির। কিন্তু, ভোটের ফলাফল বলছে, সেভাবে কোনও প্রভাবই তিনি বিস্তার করতে পারেননি। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র থেকে রেকর্ড মার্জিনে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।